চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ১৬ নভেম্বর, ২০১৯

চট্টগ্রামে ৪টি ফ্লাইওভার হস্তান্তর ১ ডিসেম্বর

চট্টগ্রামে নগরীতে ৯২৭ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত চারটি ফ্লাইওভার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) ১ ডিসেম্বর হস্তান্তর করার তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। চসিক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের শনিবার ১৬ নভেম্বর থেকে তিন দিন সিডিএর প্রকৌশল, মেকানিক্যাল, বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ ওই চারটি ফ্লাইওভার সবদিক থেকে ঠিকঠাক আছে কিনা তা পুনঃপরিদর্শন করে চূড়ান্ত করবে। গত বৃহস্পতিবার চসিকে উভয় সংস্থার কর্মকর্তাদের মধ্যে এক বৈঠকে ১ ডিসেম্বর হস্তান্তরের দিনটি ঠিক করা হয়।

সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়ার আগে আমরা ফ্লাইওভারগুলোতে যানবাহন চলাচলে যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয় সেগুলো এ সপ্তাহের প্রথম তিন দিনের মধ্যেই দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পুরোপুরি নিশ্চিত করব। যেমন- ফ্লাইওভারের রেলিংগুলো, বৈদ্যুতিক লাইটগুলোয় সংযোগ ঠিকঠাক আছে কিনা আমরা দেখব, কোনো ত্রুটি দেখলে সেগুলো নির্দিষ্ট সময়ে হস্তান্তরের আগেই সারিয়ে ফেলব।

উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে সংস্থার আওতাধীন সিডিএর অধীনে বাস্তবায়িত আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার, বহদ্দারহাটের এম এ মান্নান ফ্লাইওভার, কদমতলী জংশনের ফ্লাইওভার ও দেওয়ানহাট ওভারপাসটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চসিকের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সিডিএর চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, সিডিএ নির্মিত চারটি ফ্লাইওভার যথাক্রমে, বহদ্দারহাট এমএ মান্নান ফ্লাইওভার, মুরাদপুর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার এবং দেওয়ানহাট ওভার পাস ও কদমতলী ফ্লাইওভারের সৌন্দর্যবর্ধন, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর চূড়ান্ত দিন-তারিখ ঠিক করা হয়েছে। সিডিএ ফ্লাইওভার নির্মাণ করলেও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও লোকবল নেই। তাই এসব ফ্লাইওভার চসিককে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সিডিত্র সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, চট্টগ্রামের দীর্ঘতম আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর। এর আগে ২০১৩ সালে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। প্রায় ৬৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ফ্লাইওভারটি চার লেনের। ২০১৫ সালের মার্চে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ফ্লাইওভারটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নগরের শুলকবহর থেকে বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত এম এ মান্নান ফ্লাইওভার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তদারকিতে নির্মাণ কাজ শেষে ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা হয়।

নগরীর বটতলী স্টেশন থেকে ডিটি (ঢাকা ট্রান্ক) রোডের ধনিয়ালাপাড়া পর্যন্ত ফ্লাইওভার ৫৮ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১২ সালের জুলাইয়ে নির্মাণকাজ শুর হয়। এর উদ্বোধন হয় ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর। নগরীর দেওয়ানহাট ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। প্রায় ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১২ সালে এবং এটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ২০১৩ সালে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চট্টগ্রাম,ফ্লাইওভার,চট্টগ্রামের ফ্লাইওভার,সিডিএ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close