ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান (রাফি) হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামিকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ফেনী জেলা কারাগার থেকে তাদের কুমিল্লায় নেয়া হয়।

একই দণ্ডপ্রাপ্ত অপর চারজনের মধ্যে দুই নারী আসামিকে বুধবার সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং মাদরাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ দুইজনকে বিকেলে কুমিল্লা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়ার কথা রয়েছে।

২৪ অক্টোবর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নুসরাত হত্যা মামলায় রায়ে ১৬ জন আসামির সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন আদালত।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সোনাগাজী মাদরাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদদৌলা, মো. রুহুল আমিন, মাকসুদ আলম, মাদরাসার প্রভাষক আবছার উদ্দিন, শিক্ষক হাফেজ আবদুল কাদের, মাদরাসাছাত্র নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম, সাইফুর রহমান মো. জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে শাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, নুসরাতের সহপাঠী কামরুন্নাহার মণি ও উম্মে সুলতানা পপি, আবদুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মো. শামীম এবং মহিউদ্দিন ওরফে শাকিল।

ফেনী কারাগারের কারাধ্যক্ষ দিদারুল আলম জানান, কারা মহাপরিদর্শকের অনুমোদনক্রমে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামিকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

তারা হলেন, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, মাদরাসার প্রভাষক আবছার উদ্দিন, শিক্ষক হাফেজ আবদুল কাদের, মাদরাসাছাত্র নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম, সাইফুর রহমান মো. জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে শাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, আবদুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মো. শামীম ও মহিউদ্দিন ওরফে শাকিল।

দিদারুল আলম জানান, ফেনী কারাগার থেকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তরের সময় সেখানে উপস্থিত বন্দীদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

একই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কামরুন্নাহার মণি ও উম্মে সুলতানা পপিকে আগামীকাল বুধবার সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং মাদরাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদদৌলা ও মো. রুহুল আমিনকে বিকেলে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয়ার কথা।

কারাধ্যক্ষ জানান, ফেনী জেলা কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রাখার মতো ব্যবস্থা না থাকায় বিষয়টি মামলায় রায় ঘোষণার পরই কারা মহাপরিদর্শক বরাবর লিখিতভাবে জানিয়ে পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল।

গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহানকে মাদরাসার প্রশাসনিক ভবন সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে অগ্নিদগ্ধ করা হয়। ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান।

পিডিএসও/রি.মা