সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

  ১৫ অক্টোবর, ২০১৯

গৃহবধূর ছাগল বনভোজন করে খেয়ে ফেলেছে পুলিশ

গৃহবধূ নিলুফা ভেবেছিলেন ছাগল বিক্রি করে সংসারের জিনিস কিনবেন

গৃহবধূ নিলুফা ইয়াসমিন। দারিদ্র্যতার কারণে অন্যের জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। একটি ছাগল পালন করছিলেন। ভেবেছিলেন ছাগলটি বিক্রি করে সংসারের জিনিস কিনবেন। তবে তার আশাপূরণ করতে দিলো না তালা থানা পুলিশ। ছাগলটি নাকি থানা পুলিশ বনভোজন করে খেয়ে ফেলেছে।

নিলুফা ইয়াসমিন (৩৫) সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের কাজেম সরদারের মেয়ে ও একই উপজেলার মাছিয়াড়া গ্রামের আবদুল মজিদের স্ত্রী।

নিলুফা জানান, আমি অন্যের জমিতে পানের বরজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। স্বামী ঢাকাতে রিকশা চালান। বাবার বাড়ি ইসলামকাটিতে থাকি। একটি মাত্র ছাগল পুষেছিলাম। ছাগলটি বিক্রি করে সংসারের কিছু জিনিসপত্র কিনবো ভেবেছি। কিন্তু সেটি আর হলো না। গত রোববার দুপুরের দিকে ছাগলটি নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুজি করে জানতে পারি ছাগলটি ইউনিয়নের চৌকিদার সাহাবুদ্দিন নিয়ে গেছে। পরে জানতে পারি, ছাগলটি থানায় দিয়ে এসেছে।

তিনি আরো জানান, থানায় কোনোদিন যাইনি। ভয়ে ভয়ে বুধবার সকালে থানায় গিয়েছিলাম। সেখানে কনস্টেবল জানিয়েছেন—দারোগা অনেকজন নাম বলেন কোন দারোগা তবে আপনার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেবো। কিন্তু আমি নাম বলতে পারিনি। এরপর ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদে ফিরে চৌকিদার সাহাবুদ্দিনকে ছাগলের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন—ছাগল থানা পুলিশের লোকজন বনভোজন করে খেয়ে ফেলেছে। তুমি থানায় গেলে তোমাকে আরো জরিমানা দিতে হবে কিন্তু।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিলুফা বলেন, দুই মাস আগে ছাগলটির দাম ৭ হাজার টাকা বলেছিল আমি বিক্রি করিনি। এখন আমার বড় ক্ষতি হয়ে গেল।

এ বিষয়ে ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার সাহাবুদ্দিন বলেন, ছাগলের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। জানেন না তবে মহিলাকে এসব বলেছেন কেন—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার এখানে এসে কান্নাকাটি করছিল। তখন দুজন মেম্বারকে বলেছি। থানার কোনো কথা আমি বলিনি।

এদিকে, তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল বলেন, থানায় কেউ কোনো ছাগল জমা দেয়নি বা বনভোজনের ঘটনাও ঘটেনি। চৌকিদার যদি এসব বলে থাকে তবে সে হয়তো কিছু একটা করেছে। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
তালা থানা,ছাগল,বনভোজন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close