এইচ আর তুহিন, যশোর

  ১৯ জুলাই, ২০১৯

কোরবানির বাজার

যশোরের খামারে মজুদ ৭০ হাজার পশু

আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলক্ষে পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত যশোরের খামারিরা। এবার জেলার খামারগুলোতে রয়েছে প্রায় ৭০ হাজার গরু, ছাগল ও ভেড়া। যা চাহিদার তুলনায় ১০ হাজার বেশি।

ক্ষতিকর হরমোন কিংবা ইনজেকশনের ব্যবহার ছাড়াই দেশীয় পদ্ধতিতে এসব গবাদি পশু পালন করছেন বলে দাবি খামারিদের। ভালো দাম পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা। খামারিরা ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ চায়। ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ হলে দেশীয় খামারিরা ভালো দাম পাবে বলে তাদের আশা।

জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্রে জানা গেছে, কোরবানি উপলক্ষে যশোর জেলায় ১০ হাজার ৮২৭টি খামারে ৭০ হাজার ৬২৪টি গরু ও ছাগল মোটাতাজা করা হচ্ছে। এর মধ্যে গরু ৩১ হাজার ৬২২টি ও ছাগল-ভেড়া রয়েছে ৩৯ হাজার দুইটি। এবার জেলায় চাহিদা রয়েছে ৬০ হাজার গরু, ছাগল ও ভেড়া। সেই হিসেবে জেলায় প্রায় ১০ হাজার পশু বেশি লালন-পালন হয়েছে। জেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় এ পশু বিক্রি সম্ভব হবে।

মনিরামপুর উপজেলার ইত্যা গ্রামের বাসিন্দা ইয়াহিয়া মোল্যা জানান, ৪৫ হাজার টাকায় তিন বছর আগে ‘হলেস্টিয়ান’ জাতের একটি গরু কিনেছিলাম। গত বছর এর দাম সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা হইছিল বেঁচিনি। ঢাকার এক পার্টি (গরু ব্যবসায়ী) সাড়ে ৮ লাখ দাম বলেছে। এবার গরুটির দাম চাচ্ছি ১২ লাখ টাকা। ওই দামে বিক্রি করতে পারলে ক্রেতাকে খুশি হয়ে পালসার মোটরসাইকেল উপহার দেব।

তিনি আরো জানান, গরুটির বয়স ৩ বছর ১১ মাস। শরীরের দৈর্ঘ্য ১০ ফুট, প্রস্থ ৬ ফুট। এর ওজন প্রায় ২০ মণ। ষাঁড়টির কাঁচাঘাস, খৈল, গমের ভুসি এবং চালের পালিশ (ধান ভাঙানোর সময় চালের গায়ে থাকা ভিটামিনসমৃদ্ধ গুঁড়া) নিয়মিত খাওয়ানো হয়। প্রতিদিন গোসল করানো হয়।

যশোর সদর উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, একটি গরুর জন্য দিনে শতাধিক টাকা খরচ হয়। প্রতিদিন খাবার হিসেবে খৈল, ভুসি, কুড়া, ফিড ও কাঁচা ঘাস দিতে হয়। এ বছর ১২টি গরু মোটাতাজা করছেন। মানভেদে প্রতিটি গরুর দাম ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত হবে। গরু বিক্রি করে এবার লাভের আশা করছেন তিনি।

একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভারতীয় গরুর আমদানি না থাকলে খামারের গরুর দাম বেশি পাওয়া যাবে। ভালো দাম পেলে দেশি খামারিরা আগ্রহী হবে। ভারতের ওপর নির্ভর করতে হবে না।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ভবতোষ কান্তি সরকার জানিয়েছেন, জেলায় এবার কোরবানির উদ্ধৃত্ত পশু রয়েছে। জেলার চাহিদা পূরণ করে দেশের জন্য জেলায় যোগান দেওয়া সম্ভব হবে। পশুর শরীরে যাতে ক্ষতিকর ইনজেকশন পুশ না করতে পারে সেদিকে আমরা নজর রাখছি। একই সঙ্গে খামারিদেরও উদ্বুদ্ধ করছি। ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হলে দেশীয় খামারিরা লাভবান হবেন।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
যশোর,পশুর খামার,কোরবানি ঈদ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close