আজ থেকে আর ভিক্ষাবৃত্তি করতে হবে না ৮০ বছর বয়সী আমেনা বেগমকে। আমেনার সাথে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে চিরতরে মুক্তি পেলেন টংলী বেওয়া, সবুরা বেগম, ইমাম আলী, ভেংলু খাতুন, নিজাম উদ্দীন, খোরো মোহাম্মদও। এদের মধ্যে চারজন এখন ক্ষুদ্র মুদি দোকান ব্যবসায়ী। তিনজন করবেন ছাগল পালন। এদের সবার বাড়ি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায়। এরা দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবনযাপন করে আসছিল।

ভিক্ষাবৃত্তি পেশা থেকে তাদেরকে চিরতরে মুক্তি দিতে পুনবার্সনের ব্যবস্থা করে দিল বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সমাজসেবা অফিস ও উপজেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার বিকালে আনুষ্ঠানিকভাবে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ওই সাতজনের মাঝে ২৫ হাজার টাকা মূল্যের মুদি দোকান ও একই মূল্যের চারটি ছাগল তুলে দেন রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা।

কর্মসূচির উদ্বোধনের পর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা বলেন, এমন একটি কর্মসুচির উদ্বোধন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। এমন মহৎ উদ্যোগ হাতে নেওয়ার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

জেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে, ভিক্ষুক পুনবার্সন ও বিকল্প কর্মসংস্থান শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় এক জরিপ থেকে খুঁজে বের করে জেলার ৪ হাজার ১০ জন ভিক্ষুকের মধ্যে ইতোমধ্যে ৯ শত ৬৩ জনকে পুনবার্সনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চলতি মাসে ৪ উপজেলায় আরো ৫৮ জন ভিক্ষুককে ক্ষুদ্র মুদি দোকান এবং ৪টি করে ছাগল দিয়ে পুনবার্সনের ব্যবস্থা করা হবে। এসব অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর একদিনের বেতনের অর্থ দিয়ে।

ছাগল ও দোকান পেয়ে ওরা সাতজন জানান, এখন থেকে আর ভিক্ষাবৃত্তি করবো না। সম্মান নিয়ে বেচে থাকার চেষ্টা করবো।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নুর কুতুবুল আলম, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক, উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ফিরোজ সরকার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা উপজেলা পাড়িয়া ইউনিয়নের নবনির্মিত ভূমি অফিস এবং ঐতিহ্যবাহী হরিণমারী আমগাছের রেস্ট হাউজের উদ্বোধন করেন।

পিডিএসও/হেলাল