মোঃ রাজু খান, ঝালকাঠি
ঝালকাঠিসহ দক্ষিণাঞ্চলে ভরা মৌসুমে ইলিশের আকাল
মে মাসে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে আবার জেলেদের মুখে হাসি ফিরবে এই আশা নিয়ে বুক বেঁধে থাকলেও ঝালকাঠিসহ দক্ষিণাঞ্চলে ইলিশের অবাধ বিচরণ একেবারেই নেই।জেলেরা সারাদিন জাল ফেলেও ২/৪টির বেশি ইলিশ পাচ্ছেন না।
মৎস্য বিভাগের মতে, গত ১ জুন থেকে ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও নদী থেকে জেলেরা ফিরছেন বিষণ্ণ মুখে। যেন বন্ধ্যা ভূমিতে পরিণত হয়েছে বিস্তীর্ণ ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিষখালী, গাবখান এবং মেঘনা ও বরগুনা-পটুয়াখালী সাগর মোহনা। অপরদিকে সাগরে মাছ ধরায় রয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। জেলেরা নদীতে জাল বিছিয়েছে। কিন্তু বিধি বাম। মৌসুম শুরুর দুসপ্তাহ পার হলেও ইলিশের দেখা মিলছে না নদীর বুকে।
সারাদিনে প্রায় ১৬ ঘণ্টায় দুবার জাল ফেলে মাত্র চারটি ইলিশ পেয়েছেন জেলে অধির মালো। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ওই দুটি ইলিশের নিলামে দাম উঠে সাড়ে তিন হাজার টাকা। তিনি জানান, গত দুদিনে চারজন মানুষের খাওয়ার খরচই হয়েছে হাজার টাকার মতো। এখন বেশিরভাগ জেলের একই অবস্থা। ইলিশ ধরা পড়ছে না শুনে জেলেরা নদীতে নামছেন না। কেউ কেউ মহাজন, এনজিওর কাছ থেকে ধারদেনা করতে শুরু করেছেন।
জেলেদের অভিযোগ, প্রভাবশালী মালিকদের কারণেই নদী এখন ইলিশ শূন্য। দ্রুত টাকার মালিক হতে নিষিদ্ধ মৌসুমে যে হারে জাটকা আর মা ইলিশ ধরা হয়েছে; সে কারণেই এখন আর ইলিশ মিলছে না। মৌসুমের শুরু থেকেই নদী যেন ইলিশ শূন্য হয়ে পড়েছে। ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলেরা নদীতে নামতে চাচ্ছেন না। মৌসুমের শুরু থেকেই মেঘনায় চলছে ইলিশের আকাল।
জেলে নুরুল ইসলাম ও লতিফ রাঢ়ী জানান, জেলেরা ধার-দেনা করে দিন কাটাচ্ছেন। জেলেদের আশা, আগামী পূর্ণিমার ঢলে হয়তো বা ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করবে।
মৎস্য ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, গভীর সমুদ্রে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং মেঘনাসহ উপকূলের নদীগুলোতে মৌসুমের শুরু থেকেই ইলিশ মিলছে না। মোকামে বর্তমানে গত বছরের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ ইলিশও আসছে না। এ কারণে দামও এখন আকাশচুম্বী।
জহির সিকদার বলেন, বর্তমানে কেজি সাইজের ইলিশ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি এক হাজার পাঁচশ টাকা দরে।যা গত বছর বর্তমান সময়ে ছিলো এক হাজার টাকা।
পিডিএসও/তাজ