তাজুল ইসলাম পলাশ, চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামে ইমপেরিয়াল হাসপাতালের যাত্রা শুরু
এসেছি বাংলাদেশ থেকে রোগী যাওয়া বন্ধ করতে : ডা. দেবী শেঠী
ভারতের নারায়ণা ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী প্রসাদ শেঠী বলেছেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাত্রার হার কমানোর লক্ষ্য নিয়ে চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করেছে ৩৭৫ শয্যার বেসরকারি ইমপেরিয়াল হসপিটাল লিমিটেড। এখন আর বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমি শুধু এসেছি বাংলাদেশ থেকে রোগী যাওয়া বন্ধ করতে। আমি চাই না বাংলাদেশিরা বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাক।
শনিবার সকালে নগরীর পাহাড়তলি বিশ্বমানের ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সেবা চালু উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. দেবী প্রসাদ শেঠী এসব কথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডা. দেবী প্রসাদ শেঠী হাসপাতালে আন্তর্জাতিক মানের পরিকল্পিত স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এর ফলে বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার হার হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন তিনি।
দেবী শেঠী বলেন, এটি (ইমপেরিয়াল হসপিটাল) বাংলাদেশে সঠিক ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবার নতুন সংযোজন। ভালো চিকিৎসার জন্য ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যাওয়া বাংলাদেশি মানুষের সংখ্যা প্রতিবছর বাড়ছে। এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ফলে এ প্রবণতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
ডা. দেবী শেঠী বলেন, এ হাসপাতাল বাংলাদেশে সঠিক ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবার নতুন সংযোজন। এটি প্রতিষ্ঠার ফলে বিদেশে বাংলাদেশি রোগী যাওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে কমে আসবে।
ডা. দেবী শেঠীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে চট্টগ্রাম ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগ। ইতোমধ্যে বিভাগটির নামকরণ করা হয়েছে ইম্পেরিয়াল-নারায়ণা কার্ডিয়াক সেন্টার।
ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. রবিউল হোসেন বলেন, ইম্পেরিয়াল-নারায়ণা কার্ডিয়াক সেন্টারটি ডা. দেবী প্রসাদ শেঠীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। ভারতের নারায়ণা ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সের চিকিৎসক-নার্সরা এখানে সেবা দেবেন। পুরো সেন্টারটি তারা নিয়ন্ত্রণ করবে। ইতোমধ্যে সব ধরনের যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়েছে।
দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, হাসপাতালের কমিশনিং কনসালটেন্ট অ্যাড লি হ্যানসন এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডা. দেবী শেঠীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ইমপেরিয়াল হসপিটালের হৃদরোগ বিভাগের কার্যক্রম চলবে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, রোগী নিরাপাত্তা এবং কর্মী নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাত একর জমির ওপর পাঁচটি ভবন নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই হাসপাতাল। এর সঙ্গে আছে নার্স এবং টেকনিশিয়ানদের জন্য একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র।
হাসপাতালের নকশা প্রণয়ণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্থাপত্য সংস্থা। প্রকৌশল, তথ্যপ্রযুক্তি এবং বায়োমেডিকেল বিষয়ে কারিগরি সহযোগিতা দিয়েছে ইউরোপের একটি কনসালটেন্ট গ্রুপ।
হাসপাতালে পাওয়া যাবে সার্বক্ষণিক ইমার্জেন্সি সেবা। কার্ডিয়াক, ট্রান্সপ্ল্যান্ট, নিউরো, অর্থোপেডিক ও গাইনি অবস্ বিষয়ে ১৪টি মডিউলার অপারেশান থিয়েটার আছে। আছে ১৬টি নার্স স্টেশন। ৬২টি কনস্যালটেন্ট রুমসহ বহির্বিভাগ এবং ৬৪টি ক্রিটিক্যাল কেয়ার বেড। নবজাতকদের জন্য ৪৪ শয্যার নিওনেটাল ইউনিট এবং ৮টি পেডিয়াট্রিক আইসিইউ আছে।
রোগীর স্বজনদের জন্য হাসপাতাল পরিধির মধ্যে থাকার ব্যবস্থা আছে। এছাড়া ১০ শতাংশ শয্যা সংরক্ষিত আছে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল রোগীদের জন্য।
পিডিএসও/রি.মা