reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০১ জুন, ২০১৯

ক্ষোভ থেকেই নারী আইনজীবীকে হত্যা করেন মসজিদের ইমাম

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় চাঞ্চল্যকর নারী আইনজীবী আবিদা সুলতানাকে (৩৫) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মসজিদের ইমাম তানভির আলম।

শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বড়লেখা আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হরিদাস কুমারের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় তিনি এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আবিদা হত্যা মামলায় তানভির আলম ১০ দিনের রিমান্ডে ছিলেন।

রিমান্ডের ৪র্থ দিন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়ায় তানভির আলকে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম। তানভীর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার ছিল্লারকান্দি গ্রামের ময়নুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, তানভির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে কিভাবে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় ও কি কারণে হত্যা করেছেন তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। ক্ষোভ থেকেই একাই হত্যা করেছেন জানিয়ে তানভির জবানবন্দিতে বলেছেন, মসজিদের গাছ কাটা ও বিভিন্ন ইস্যুতে ঘটনার দিন আবিদার সাথে তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। তখন পানির ফিল্টারের ডাকনা সামনে ছিল। ডাকনা দিয়ে সজোরে মাথায় আঘাত করেন তানভির। আঘাতে মাথা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান আবিদা। এরপরে আবিদার মুখ ও গলা কাপড় দিয়ে পেচিয়ে হত্যা করে।

গত রোববার মধ্যরাতে বড়লেখায় ঘরের ভেতর থেকে নারী আইনজীবী আবিদা সুলতানার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সোমবার রাতে বড়লেখা থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন আবিদার স্বামী মো. শরিফুল ইসলাম বসুনিয়া।

সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার ছিল্লারকান্দি গ্রামের ময়নুল ইসলামের ছেলে তানভীর আলম। স্থায়ী ঠিকানা সিলেটের জকিগঞ্জ হলেও কয়েক বছর ধরে বড়লেখা উপজেলার চরকোনা গ্রামে বসবাস করতেন। নিজের এলাকায় বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত ছিলেন এই তানভির। খোঁজ নিয়ে এমনিটি জানা গেছে। মাত্র ৪ মাস আগে নিহত আবিদা সুলতানার পিতার তৈরি করা পারিবারিক মসজিদের ইমাম হিসেবে তিনি চাকরি নেন।

এর আগে বড়লেখার বরইতলি নামক এলাকায় একটি মসজিদে ইমামতি করলেও মসজিদ কমিটি সেখান থেকে বের করে দেয়। নতুন কর্মস্থল মসজিদে যোগদানের পর স্ত্রী, মা ও ছোটভাইকে নিয়ে নিহত আবিদা সুলতানার বাবার বাসায় নামমাত্র ভাড়ায় বসবাস করতেন।

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইয়াছিনুল হক আদালতে তানভির আলমের স্বীকারোক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তানভির হত্যার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী তিনি একাই আবিদাকে হত্যা করেছেন। রিমান্ডে তানভীরের দেওয়া বক্তব্য মতে ভিটিমের মুঠোফোন, সিম উদ্ধার করা হয়েছিল। রিমান্ডে থাকা তানভিরের মা ও স্ত্রীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ওসি আরো জানান, স্বীকারোক্তিতে একা হত্যার যে কথা বলেছে প্রয়োজনে যাচাই বাচাই করা হবে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা তাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ক্ষোভ,নারী আইনজীবী,হত্যা,মসজিদের ইমাম
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close