নসিমন চালক ও তার ভাগিনাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়া সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমানকে আটক করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার রাত পৌনে ১টার দিকে সোনারগাঁয়ের গোয়ালদী এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক সাজ্জাদ নোমান জানান, আটক মেয়রকে ডিবি কার্যালয়ে ব্যাপক জিজ্ঞসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

জানা যায়, সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সামনে গত শনিবার সোনারগাঁ পৌর কার্যালয় থেকে নিজ গাড়িতে রয়েল রিসোর্ট নামের একটি হোটেলে যাচ্ছিলেন মেয়র সাদেকুর রহমান। এ সময় সোনারগাঁ জাদুঘরের সামনে উদ্ভবগঞ্জ থেকে আসা টিপুরদীগামী বাঁশবোঝাই নসিমনের সঙ্গে ধাক্কায় তার গাড়ির এক পাশের রঙ উঠে গিয়ে দাগ পড়ে যায়।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাদেকুর রহমান গাড়ি থেকে নেমে নিজের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে প্রতিবন্ধী যুবক জামাল হোসেন ও তার ভাগিনা তামিমকে মারতে শুরু করেন। অপরাধ শিকার করে যুবক জামাল মেয়রের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েও রক্ষা পাননি। দুই শ্রমিককে মারধর করে গাড়িসহ আটক করে রাখা হয়। দুই ঘণ্টা পর মেয়র সাদেকুর রহমান বাসায় ফেরার পথে তাদের ছেড়ে দেন।

মেয়র ছেড়ে দেওয়ার পর নির্যাতিত দুই শ্রমিককে স্থানীয় যুবক রিপন খাঁন প্রাথমিক চিকিৎসা করান। পরে তাদের স্বজনরা এসে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়রের মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সবখানে মেয়রের শাস্তি দাবি ওঠে। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের নির্দেশে সোমবার রাতে মেয়র সাদেকুর রহমানকে আটক করে ডিবি পুলিশ।

মেয়র সাদেকুর রহমান দাবি করেন, নসিমন চালক ও তার ভাগিনাকে মারধরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তাদের কাছে মাফ চেয়েছেন। তবে রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে জানান তিনি।

পিডিএসও/তাজ