বিশেষ প্রতিনিধি
তাপদাহের রুদ্রমূর্তিতে রাজশাহীর কর্মজীবনে স্থবিরতা
রাজশাহীতে শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রকৃতির রুদ্রমূর্তিতে স্থবিরতা নেমে এসেছে কর্মজীবনে। শ্রাবণ মাসেও যেন বৈশাখের তাপদাহ চলছে। খাঁ খাঁ করছে রাজশাহী নগরীসহ বৃহত্তর উত্তরাঞ্চল। মানুষের পাশাপাশি কাহিল পশু-পাখিরাও। মাঠ-ঘাট, বাসা কিংবা অফিস-আদালত কোথাও নেই স্বস্তি। ফলে রাজশাহীসহ উত্তারাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এদিকে, শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন থাকলেও রুদ্রমূর্তির তাপে বিনোদন কিংবা সাংসারিক অন্যান্য কোনো কাজে বের কেউ বের হননি বললেই চলে। তবে আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন কেন্দ্রীক প্রার্থী ও সমর্থকদের গনসংযোগ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।প্রচন্ড তাপদাহের কারণে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকেই মহানগরীর রাস্তা ঘাট ফাঁকা হতে শুরু করে। মাথার উপরের নীল আকাশটা যেনো তাঁতালো কড়াইয়ের রূপ নেওয়ায় তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়ছে প্রকৃতি। আর গরম বাতাস শরীরে বিধছে অগ্নিশিখার মতো। সূর্যের প্রখর কিরণে খালি মাথায় বের হওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। অব্যাহত এ তাপদাহের কারণে আখের শরবত, ডাব, তরমুজ, বেলসহ রসালো ফলের চাহিদা বেড়েছে।
রাজশাহী মহানগরীর ডিঙ্গাডোবা ঈদগাহ মোড়, নিউমার্কেট, রানী বাজার, জিরো পয়েন্ট ও লক্ষীপুর মোড়ের আখের রস বিক্রেতারা জানান, অসহনীয় গরম ও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আমাদের ব্যবসাটা বেড়ে গেছে। রস খাওয়ার জন্য মানুষ রিতিমত লাইন ধরছে। যা অন্য কোন সময় এমন বিক্রি হয়না। আর তীব্র দাবদাহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে, শিশু ও হৃদরোগ ওয়ার্ডে কোনো জায়গা নেই।
রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের সিনিয়র পর্যবেক্ষ শহিদুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মুঠোফোনের মাধ্যমে প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, শুক্রবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সর্বনি¤œ ছিল ২৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৭৪ শতাংশ। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন থেকে রাজশাহী অঞ্চলের উপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত না হলে পরিস্থিতি উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
সূত্র মতে, ১৯৪৯ সাল থেকে বাংলাদেশে তাপমাত্রা রেকর্ড শুরু হয়। এরমধ্যে ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। গত কয়েকদিন থেকে অব্যাহত তাপপ্রবাহে এতবছর পর আবারও সে রেকর্ড ভাঙার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন সবাই।
পিডিএসও/রানা