চট্টগ্রাম ব্যুরো
অবশেষে শিশু রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় মামলা
চট্টগ্রামের আলোচিত সাংবাদিক কন্যা শিশু রাইফার চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার বিকেল ৪টার দিকে চকবাজার থানায় অসংখ্য সাংবাদিকের উপস্থিতিতে রাইফার বাবা দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার রুবেল খান মামলাটি দায়ের করেন।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ম্যাক্স হাসপাতালের অভিযুক্ত ৩ ডাক্তার বিধান রায়, ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত, ডা. শুভ্র দেব এবং হাসপাতালের এমডি লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেন শিশু রাইফার বাবা রুবেল খান।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী মেয়ে রাইফা গলায় ব্যথা নিয়ে চট্টগ্রামের মেহেদীবাগের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরদিন রাতে তার মৃত্যু ঘটে। ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভ করেন সাংবাদিকরা। পরে ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটিও এ ঘটনার তদন্ত করে।
সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন কমিটি ঘটনার এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার রাতে তাদের প্রতিবেদন দেয়, যাতে এই দুই চিকিৎসকের পাশাপাশি শিশু বিশেষজ্ঞ বিধান রায়কেও চিকিৎসায় অবহেলার দায়ে অভিযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাইফা যখন তীব্র খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয় তখন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয় এবং ওই সময়ে থাকা সংশ্লিষ্ট নার্সদের আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও এ রকম জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মতো দক্ষতা বা জ্ঞান কোনোটাই তাদের ছিল না।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী শিশুটিকে যথেষ্ট সময় ও মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা করে দেখেননি। ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব শিশুটির রোগ জটিলতার বিপদকালীন সময়ে আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদান করেননি বলে শিশুর পিতা-মাতা যে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, যাহা এই তিন চিকিৎসকের বেলায় সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।
এছাড়া রাইফাকে ম্যাক্স হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা থেকে শুরু করে শেষ চিকিৎসা পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে তার অভিভাবকের ভোগান্তি চরমে ছিল বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদন দেওয়ার আগেই ডা. দেবাশীষকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছে ম্যাক্স হাসপাতালের পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী।
পিডিএসও/রিহাব