লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ১৬ জুলাই, ২০১৮

সংযোগ ছাড়াই বিদ্যুৎ বিলের ঘটনায় নির্বাহী প্রকৌশলীসহ বহিস্কার ৩

সংযোগ ছাড়াই ২ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিলের ঘটনায় নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ৩ জনকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।

সোমবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নেসকো রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসের এক আদেশে তাদেরকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়। বহিস্কারাদেশ প্রাপ্তরা হলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নেসকো এর লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানুর রহমান, সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ও মিটার রিডার( মাষ্টারোল) স্থানীয় দালাল সাইফুল ইসলাম।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নেসকো রংপুর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, গত ১০ জুলাই দেশের একটি গণমাধ্যমে " সংযোগ ছাড়াই বিদ্যুৎ বিল " শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখে জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে ইউএনওকে নির্দেশ প্রদান করেন। সেই তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী রোববার জেলা সম্বন্বয় কমিটির সভায় জোরালো আলোচনা উঠে। জনগনের ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে জেলা সম্বন্বয় কমিটি।

যার প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নেসকো রাজশাহী অঞ্চলিক কার্যালয় প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত তিনজনকে সাময়িক ভাবে বহিস্কার করেন। একই সাথে ভুয়া এসব বিল মওকুফ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নেসকো রংপুর বিভাগিয় তত্ববধায়ক প্রকৌশলী গোলাম মর্ত্তুজা জানান, লালমনিরহাট জেলা সম্বন্বয় কমিটির সুপারিশ ক্রমে রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয় নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানুরসহ তিনজনকে সাময়িক বহিস্কার করেন। ভুক্তভোগি ৪৩ কৃষক পরিবারের এসব ভুয়া বিল মওকুফ করা হয়েছে। তাদেরকে এসব বিল আর দিতে হবে না।

ভুক্তভোগি ও এলাকাবাসী জানান, মহিষাশ্বহর গ্রামের বিদ্যুতহীন ৩৩ পরিবার বিদ্যুতের সংযোগের জন্য গত তিন বছর আগে আবেদন করেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কালীগঞ্জ শাখায়। আবেদনের পর স্থানীয় বিদ্যুতের দালাল সাইফুল ইসলাম প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে মিটার প্রতি ১২/১৫ হাজার টাকা বুঝে নেন এবং তিন মাসের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তিন বছর তিন মাস অতিবাহিত হলেও খুঁটি, লাইন বা মিটার কোনটাই মিলেনি তাদের ভাগ্যে।

এরই মাঝে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বেসরকারি খাতে চলে যায় এবং বিধি মতে পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় তাদের নতুন সংযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। এতেই বিপাকে পড়েন বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা ও দালাল চক্রটি।

এ দিকে গ্রাহকদের চাপের মুখে গত বছর ওই গ্রামের ৩৩টি পরিবারের জন্য ৩৩ টি মিটার পাঠান দালাল সাইফুল ইসলাম। খুঁটি বা লাইন না পেয়ে গ্রাহকরা মিটারগুলো বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এরই মাঝে গত জুন মাসে ওই গ্রামের ৪৩টি পরিবারের নামে জনপ্রতি ৫ হাজার ৯৩ টাকা হারে দুই লাখ ১৮ হাজার ৯৯৯ টাকার বিদ্যুৎ বিল পাঠায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নেসকো।

বিদ্যুৎ বিল দেখে হতভম্ভ পরিবারগুলো বিলের কাগজপত্র নিয়ে কালীগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিস গিয়ে এর সমাধান দাবি করলেও কোনও কাজ হয়নি। তাই এসব ভুয়া বিল বাতিল করে দ্রুত লাইন সংযোগ করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে গত ১০ জুলাই বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।

জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আসাদুজ্জামান জানান, তদন্ত শেষে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় জেলা সম্বন্বয় কমিটির সভায় সকল সদস্যরা কৃষকদের অহেতুক এ বিল মওকুফ করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করেন। যার প্রেক্ষিতে কৃষকদের ভুয়া এসব বিল মওকুফ করতে কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সংযোগ,বিদ্যুৎ বিল,বহিস্কার
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist