গিয়াস উদ্দিন রনি, (কোম্পানীগঞ্জ) নোয়াখালী
কোম্পানীগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে একটি নতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান, কাজের শুরুতেই নিন্মমানের পাথর, ইট, বালি এনে স্তুপ করলেও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী বাধা দিচ্ছেন না। বর্তমানে এ প্রকল্পের কাজ নিন্মমানের সামগ্রীতে শুরু করার পূর্ণ আয়োজন সম্পন্ন করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ঠিকাদার।
সূত্রে জানা যায়, নিড বেচ প্রকল্পের আওতায় আলী আকবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় প্রায় ৬২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কোম্পানীগঞ্জ এলজিইডির তত্বাবধানে পরিচালিত এই প্রকল্প বাস্তবায়নকল্পে কাজের দায়িত্ব পান মেসার্স সিনহা এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মাঠ পর্যায়ে কাজটা করছেন স্থানীয় ঠিকাদার কাশেদ ও সবুজ।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিনহা এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মো.হানিফ সবুজ’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমার লাইসেন্স এ অন্য ঠিকাদার এই কাজ করছে।
এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের ঠিকাদার কাশেদ’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন পাথরগুলো মানসম্পন্ন। উপরের পাথরগুলো ভালো কিন্তু নিচের পাথর গুলো নিন্মমানের, এমন প্রতিউত্তর করা হলে, বিপরীতে তিনি কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি।
স্থানীয় এলকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, উপজেলার রামপুর ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের আল মোবারক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের শুরুতেই ঠিকাদার একেবারে যেনতেন নিন্মমানের পাথর, ইট, বালু এনে স্তুপ করেছেন নির্মাণাধীন ভবনের সামনে। এই সব নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ঈদের আগে নির্মাণাধীন ভবনের নিচের সলিং, সিসি, আরসিসি বেচ ঢালাইয়ের কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ঠিকাদার কাজ শেষ করতে পারেননি। বর্তমানে পাঁচ থেকে ছয়দিনের মধ্যে নিন্মমানের এসব সামগ্রী দিয়ে এই নতুন ভবনের কাজ শুরু করা হবে।
স্থানীয় এলাকাবাসী উপজেলা প্রকৌশলী মো.ইব্রাহিম খলিলকে নিন্মমানের সামগ্রী এনে রাখা হয়েছে বলে অবহিত করেও কোনও প্রতিকার পায়নি।
এ প্রতিবেদক সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে, স্থানীয় এলাকাবাসী ও একাধিক নির্মাণ শ্রমিক নিন্মমানের পাথর, ইট, বালু নিন্মমানের বলে অভিযোগ করেন। এ সময় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মানসম্মত কাজ করতে সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা বরাদ্দ ও তদারকির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নিয়োগ দিলেও এ প্রকল্পের শুরুতেই সরকারি নিয়মনীতির প্রতি কোনও তোয়াক্কা করছেনা ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশলী।
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সাত্তার’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ঠিকাদার নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জামিরুল ইসলাম’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি নির্মাণাধীন ভবনস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো.ইব্রাহিম খলিল’র মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও প্রকল্প তদারকি কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী সম্পর্কে উপজেলা প্রকৌশলীর অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রকৌশলী সোমবার সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নিন্মমানের সামগ্রী পরিবর্তন করে, মানসম্পন্ন নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।
পিডিএসও/রিহাব