খাগড়াছড়ি প্লাবিত
টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে খাগড়াছড়িতে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে চেঙ্গী নদীর পানি। এ অস্বাভাবিক পানি বাড়ায় জেলা শহরে প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন অনেক এলাকা। এসব এলাকায় কোথাও কোমর সমান, কোথাও গলা আবার কোথাও হাঁটু সমান পানি উঠেছে।
জেলা শহরের মাষ্টার পাড়া, ভাংগা ব্রিজ সড়কসহ কিছু স্থান প্লাবিত হওয়ায় স্থানীয়রা বলছেন এটিই স্মরণকালের ভয়াবহ ঘটনা। অন্যান্য সময় বৃষ্টিতে নদীর পানি বাড়লে জেলা শহরের কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। তবে তা বেশি সময় দীর্ঘায়িত হয় না।
তবে এবছরে নিম্নাঞ্চল ছাড়িয়েও অনেক উঁচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দিও হয়েছে অতীতের থেকে সবচেয়ে বেশি লোক। গ্রাম ছাড়িয়ে শহরের কয়েকটি সড়ক তলিয়েছে টানা দুই দিনের এ বৃষ্টিতে।
এছাড়া জেলা শহরের শাপলা চত্বর এলাকায়ও ছিল পানির ঢল। শহরের পৌরসভা সংলগ্ন ব্রিজের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। খাগড়াছড়ি বাজারে শুটকি ব্যবসায়ী মো. খোরশেদ আলম জানান, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তিনি এর আগে দেখেননি। ২০০৭ সালে সৃষ্ট বন্যার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এর আগে ওটাই ছিল তার দেখা বড় বন্যা। তবে এতো বেশি ও মানবিক বিপর্যয় এই প্রথমবারের মত দেখেছেন তিনি। এছাড়া একটানা বৃষ্টিপাত ও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঘটনা এটাই তার কাছে প্রথম।
খাগড়াছড়ি জেলা শহরের মনটানা হোটেলের ব্যবসায়ী সিরাজ সওদাগর বলেন, এমন ভয়াবহ পানির খেলা এটাই তার প্রথম দেখা। খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর (মাস্টারপাড়া) জাফর আহমেদ জানান, টানা বৃষ্টি ও পানির কারণে এলাকার রাস্তা ডুবে গেছে। ধসে পড়েছে গাইড ওয়াল ও বাউন্ডারি ওয়াল। ডুবে গেছে এলাকায় অবস্থিত সড়ক বিভাগ কোয়ার্টার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড অফিসসহ ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মাষ্টার পাড়া এলাকায় এতো পানি ও ঘর বাড়ি পানিতে ডুবে থাকাটা তিনি এই প্রথম দেখেছেন।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম বলেন, রাত থেকেই সকাল পর্যন্ত সবকটি প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। টানা বৃষ্টিতে পৌর এলাকার দুই তৃতীয়াংশ এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন ক্লাবে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অনেক পরিবারকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। পৌর এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে থাকা লোকজনদের সরিয়ে নিতে পৌরসভার উদ্ধার টিম ও মাইকিং করা হচ্ছে।
পিডিএসও/রিহাব