রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভূমিধসের আশঙ্কাই সত্যি হলো
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে ভূমিধসের যে আশঙ্কা করা হয়েছিল, সেটাই সত্যি হয়েছে। গত তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে টেকনাফের শরণার্থী শিবিরে ভূমিধসে অন্তত পাঁচশ লোক আহত হয়েছেন। একই সঙ্গে ধ্বংস হয়েছে রোহিঙ্গাদের ছয়শ বাড়ি।
রোববার টেকনাফের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জি ব্লক, জি-সেভেন ব্লক, বালুখালী ক্যাম্প, টেংখালি এলাকায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে গত কয়েক দিন ধরে ঝড়ো হাওয়া ও একটানা প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্বের জেলা কক্সবাজারে। এই জেলার টেকনাফে বসবাস করছেন সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী।
কুতুপালং ক্যাম্পে থাকা একজন রোহিঙ্গা শরণার্থী জানান, যারা পাহাড়ের উপরে বা নিচে ঘর তৈরি করেছিল, তারা আহত হয়েছে। যারা পাহাড়েরে নিচে বাড়ি বানিয়েছে, তারা এখন বন্যার কবলে পড়েছে।
বর্ষা মৌসুমে কয়েক লাখ মানুষ বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে পড়বে- এ ধরনের আশঙ্কা প্রথম থেকেই করা হচ্ছিল। কারণ সেখানে পাহাড়ি বন কেটে উজাড় করা হয়েছে।
একই সঙ্গে অনেকে বাস করছেন টিলা বা পাহাড়ের ওপরে আবার অনেকে বাস করছেন পাহাড়ের নিচে। তাই ভূমিধস এবং বন্যার দুই দুর্যোগে কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে তাদের।
টেকনাফের স্থানীয় সাংবাদিক ওবায়দুল হক চৌধুরী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা না করার কারণেই ভূমিধসে এমন আহতের ঘটনা ঘটেছে।’
টেকনাফের শরনার্থীদের জন্য যে ক্যাম্পগুলো তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো অস্থায়ী ত্রিপলের ছাউনি এবং বেড়া দিয়ে নির্মিত। রেড ক্রিসেন্ট বলছে, সেখানে দুই লাখের মতো মানুষ ভূমিধসের ঝুঁকিতে রয়েছে।
সরকার রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভাসানচরে সুনির্দিষ্ট মডেলে ঘরবাড়ি এবং সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ শুরু হয়েছে। তবে ঠিক করে নাগাদ রোহিঙ্গা স্থানান্তর সম্ভব হবে সেটা স্পষ্ট নয়।
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার প্রকল্পের কাজ সম্পর্কে কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, ‘ভাসানচর সম্পর্কে উত্তর দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্য আমার হাতে নেই। সেটা এখনো আন্ডারকন্সট্রাকশন। এখন নতুন করে কোনো পরিকল্পনা নেই। গত তিন মাস ধরে আমরা বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়েছি এবং সে অনুযায়ী কাজ করছি।’
পিডিএসও/রিহাব