কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
‘কুষ্টিয়ার ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল আত্মহত্যা করেছে’
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল (২৭) নিজ বাড়ীতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার আলোচিত ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসান দাবী করেছেন, অন্যকারো গুলিতে নয় নাজমুল নিজের গুলিতেই আত্মহত্যা করেছেন। অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। বিষয়টি সমর্থন করেছেন নাজমুলের পরিবারও। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে এ সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার ছাড়াও নাজমুলের বাবা আলতাফ হোসেন, মা নাজমা খাতুন, সদ্য বিবাহিত স্ত্রী উর্মি খাতুন উপস্থিত ছিলেন। তারাও এক কথায় আত্মহত্যা মেনে নিয়েছেন। যদি ও বা সংবাদ সম্মেলনে তাদেরকে কোন প্রশ্ন করতে দেয়া হয়নি সাংবাদিকদের।
পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, হতাশা থেকে নাজমুল আত্মহত্যা করেছে। তবে কি কারনে জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি, সদ্য বিবাহিত নাজমুল হতাশ ছিল তা নিশ্চিত করেননি তিনি। বিষয়টির সঠিক তথ্য দিতে পারেনি পরিবারের সদস্যরাও।
নাজমুলের মা নাজমা খাতুন বলেন, গুলির শব্দে নাজমুলের ঘরে গিয়ে দেখি গুলিবিদ্ধ নাজমুল মেঝেতে পড়ে আছে। ভয়ে দ্রুত অস্ত্রটি তুলে নিয়ে পাশের বাড়িতে লুকিয়ে রাখি। তখন নববধু নাজমুলের পাশে কাঁদছিল। পুলিশ আত্মহত্যায় ব্যবহৃত ওয়ান সুটার গান ছাড়াও একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে।
এরআগে ঘটনার দিন রাতে লাশ উদ্ধারের পরপরই ঊর্মি ও নাজমুলের বাবা আলতাব হোসেনকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। কয়েক ঘণ্টা থানায় রাখার পর দুপুরে এই দুজনকে বাড়ি ফেরত পাঠানো হয়। তবে ঊর্মির কাছ থেকে কী তথ্য পাওয়া গেছে এ ব্যাপারে কিছু জানাতে চায়নি পুলিশ। তবে বুধবার থানা-পুলিশের হেফাজত থেকে বের হয়ে আসার পর এক সাংবাদিকের সাথে নাজমুলের বাবা আলতাব হোসেনের কথা হয়।
আলতাব হোসেন দাবি করেন, তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে কেবল অস্ত্র আইনে একটি মামলা রয়েছে। তা ছাড়া নাজমুল কখনো মাদক সেবন করেননি। পুলিশের উপপরিদর্শক হওয়ার জন্য পড়াশোনা করতেন তাঁর ছেলে।
ঐ সময় নাজমুলের স্ত্রী স্বামীর মৃত্যু সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা দেননি। মৃত্যুর ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে নাজমুল ঘর থেকে বের হয়ে যান বলে জানান তাঁর স্ত্রী ঊর্মি খাতুন। তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাইরে বের হন তাঁর স্বামী। এরপর তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। রাতে নিজের ডান হাতের তর্জনীতে আঘাত পেয়ে জেগে ওঠেন। দেখতে পান তাঁর তর্জনী দিয়ে রক্ত ঝরছে। পাশে তাকিয়ে দেখেন নাজমুলের গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত লাশ মেঝের ওপর পড়ে আছে। এ সময় তাঁদের ঘরের দরজা খোলা ছিল বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের ফারাজি পাড়ায় নাজমুলের নিজ ঘরের মেঝে থেকে তার মাথায় গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার হয়। এর পর থেকে নাজমুল কিভাবে হত্যা হয়েছে তা নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়। নাজমুল গত রবিবার উর্মি খাতুনকে বিবাহ করে। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
পিডিএসও/রানা