ফরাজী মো.ইমরান,কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
উপকূলের পোল্ট্রি শিল্পে টারকি : খামারিদের অভাবনীয় সাফল্য
দেশের পোট্রি শিল্পে নতুন সংযোজন টারকি মুরগি। রঙিন মাংসল এ মুরগি। দারুন চঞ্চল আর আদরপ্রিয় এক পোট্রি প্রজাতি। যা খামারকে সমৃদ্ধ করে তোলে তার আপন বৈশিষ্ট্যে। তারই ধারাবাহিকতায় সমুদ্র উপকূলীয় উপজেলা কলাপাড়ার অনেক সৌখিন উদ্যোক্তরা গড়ে তুলেছেন উন্নত মাংসের বৃহৎ পাখি এই টারকির খামার। ছোট্র পরিসরে শুরু করলেও অল্পদিনেই খামারিরা পাচ্ছেন অভাবনীয় সাফল্য।
উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের সোলায়মান খলিফা গড়ে তুলেছেন একটি ছোট টারকি মুরগির খামার। সখের বশে মাত্র ২৩ হাজার পাচঁশত টাকায় দুই জোড়া টারকি কিনে পালন শুরু করেন। আর বছর ঘুরতেই হয়ে ওঠেন ছোট্র এক বানিজ্যিক খামারি। ইতোমধ্যে তার খামারে স্থান পেয়েছে প্রচলিত অপ্রচলিত কয়েক জাতের টারকি। একই সঙ্গে গড়ে তুলেছেন তার নিজ বাড়িতে টারকি পালন ও বাজারজাত করনের একটি ছোট্র অস্থায়ী প্রতিষ্ঠান। এখন তার দেখাদেখি উপকূলের অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন টারকি পালনে।
খামারি সোলায়মান বলেন, বছর কয়েক আগে টিভিতে দেখে সখের বসে সাতক্ষীরা থেকে মাত্র দুই জোড়া টারকি নিয়ে পালন শুরু করেন। তা থেকে প্রায় দুইলক্ষ টাকা বিক্রি করেছেন। শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ লাভজনক হওয়ায় তিনি এখন বানিজ্যিভাবে শুরু করেছেন টারকি পালন। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দুইশত টারকি। তিনি আরও জানান, এক একটি টারকি মুরগি ২৫ থেকে ৩০ টি পর্যন্ত ডিম দেয়। আর এক জোড়া ডিম বিক্রি হয় ৪০০ শত টাকা দরে। এছারা ডিম ফুটিয়ে মাত্র ৫ দিনের বাচ্চা জোড়া প্রতি এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়। আলাদা ভাবে টারকি মুরগির কোন খাবারের প্রয়োজন হয় না। এছাড়া এ খামরির বেশি একটা পুজি না থাকায় তিনি ব্যাপক ভাবে খামার প্রস্তুত করতে পারছেন না। দুর দুরান্ত থেকে অনেক ক্রেতারা এসেও তার কাছ থেকে খালি হাতে ফিরে যায়।
ময়ূর আকৃতির দেখতে এ টারকি প্রজাতি পালনে আগ্রহী অনেকেই জানিয়েছেন, ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় প্রাপ্ত বয়স্ক দুই এক জোড়া টারকি কিনতে পাওয়া গেলেও ব্যাপকভাকে এ টারকি কিনতে পাওয়া খুবই দুষ্কর। তবে স্থানীয় ভাবে যারা ইতোমধ্যে ছোট খাটো খামারি হয়ে উঠেছেন তাদের সরকারি ভাবে সহযোগিতা করলে এ টারকির যেমনি ব্যপক বিস্তার ঘটবে তেমনি অনেক সৗখিন বেকারদের বেকারত্বও কমবে বলে মনে করেছেন বিশিষ্টজনরা।
কলাপাড়া উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা মো.হাবিবুর রহমান জানান, টারকি পাখির মাংস পুষ্টিকর এবং খুবই সুস্বাদু। তবে এ বৃহত পাখি সম্মন্ধে বাংলাদেশ প্রানীসম্পদ মন্ত্রনালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোন ধারনা আমাদের দেয়া হয়নি। তবে এ টারকি মুরগি এদেশে সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে পালন করতে পারলে অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান বাড়বে।
পিডিএসও/রানা