reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ জানুয়ারি, ২০১৮

প্রত্যাবসনে রোহিঙ্গাদের শর্ত

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তির বিরুদ্ধে একদল রোহিঙ্গা কক্সবাজারের একটি আশ্রয় শিবিরে বিক্ষোভ করেছে। শুক্রবার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের একটি ব্লকে এই বিক্ষোভে একশোর মতো শরণার্থী অংশ নেন।

শরণার্থীদের দাবি, মিয়ানমারে তাদের ফেরত পাঠানোর আগে সেখানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি নিরাপদ এলাকা গড়ে তুলতে হবে। তবে রোহিঙ্গাদের এ ধরনের বিক্ষোভের কোনো তথ্য সরকারের কর্মকর্তাদের জানা নেই বলেও বিবিসি বাংলা-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

শরণার্থীদের বিক্ষোভের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আনুমানিক ’শখানেক লোক সেখানে জড়ো হয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের সামনে ইংরেজি লেখা একটি ব্যানার ছিল; যেখানে ছয়টি দাবি তুলে ধরা হয়।

এদিকে শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবসন চুক্তির প্রক্রিয়ার মধ্যেই নাগরিকত্বের অধিকার, ভূমি ফিরে পাওয়া এবং হত্যা-ধর্ষণ-লুটপাটের বিচারসহ কয়েক দফা শর্ত দেওয়ার পরিকল্পনা করছে কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা নেতারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ৪০টি গ্রামের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাদের স্মারকলিপি চূড়ান্ত হলেই তা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

বার্মিজ ভাষায় হাতে লেখা একটি স্মারকলিপির খসড়ায় বলা হয়, মিয়ানমার সরকার যতক্ষণ না এ সব দাবি পূরণ করছে, ততক্ষণ আশ্রয় শিবির থেকে কোনো রোহিঙ্গা মুসলমান ফিরে যাবে না।

তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- প্রথমত, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে সরকারি ঘোষণা দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, যে ভূমি থেকে উচ্ছেদ হয়ে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে, সেই ভূমি, বাড়িঘর, মসজিদ আর স্কুল তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। সেনা অভিযানের নামে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ছাড়া সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের নামে যেসব ‘নিরপরাধ’ রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামের মাঠপর্যায়ের চুক্তিটি ১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার বৈঠকে চূড়ান্ত হয়। মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠকে চুক্তিটি চূড়ান্ত রূপ পায়। জেডব্লিউজির বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বাংলাদেশের এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে তার দেশের নেতৃত্ব দেন।

চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন ৩০০ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে মিয়ানমার। তিন মাস পর এই সংখ্যা আবার পর্যালোচনা করে বাড়ানো হবে এবং শুরু হওয়ার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শেষ হবে।

মিয়ানমারের রাখাইনে ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পে সবচেয়ে বেশি শরণার্থী রয়েছে।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
প্রত্যাবসন,রোহিঙ্গা,শর্ত
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist