নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ জানুয়ারি, ২০১৮

‘৭১-এ শান্তি বাহিনীর সহযোগী ছিলেন তিনি’

মঙ্গলবার সারাদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলো কক্সবাজার-৩ আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল নিজ শিক্ষককে গলা ধাক্কা দিয়েছেন এমন একটি খবরকে ঘিরে। একটি গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবরের শিরোনাম ছিলো ‘নিজ শিক্ষককে গলাধাক্কা দেয় সাংসদ সাইমুম’। এরপর খবরটি আরও কয়েকটি অনলাইন পোর্টালেও প্রকাশিত হয়। প্রতিদিনের সংবাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল এমপির সঙ্গে। তিনি প্রতিদিনের সংবাদের অনলাইনকে বলেন, এটা মিথ্যা, সম্পূর্ণ বানোয়াট। উনি কখনোই আমার শিক্ষক ছিলেন না। তিনি ধর্ষণ মামলার আসামি। কয়েকবার এলাকায় গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন। আমার জনপ্রিয়তাকে খর্ব করতে একটা মহল বানোয়াট একটা গল্প তৈরি করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমি শিক্ষক সুনীল কুমার শর্মার সঙ্গে কথা বলেছি এটা ঠিক। তবে উনাকে গলা ধাক্কা দেওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার একটি বিবৃতি দেন সাংসদ কমল। তার সেই বিবৃতি প্রতিদিনের সংবাদের অনলাইন পাঠকের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো-

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘নিজ শিক্ষককে গলাধাক্কা দেয় সাংসদ সাইমুম’ শিরোনামে সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সংবাদে বলা হয়েছে তাকে আমি গলা ধাক্কা দিয়েছি। যা মোটেও সত্য নয়। মুলতঃ প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় নিয়ে উচ্চ বাক্য বিনিময় হয়েছিল। তাকে আমার শিক্ষক হিসেবে সংবাদে দেখা হয়েছে। অথচ তিনি কখনো আমার শিক্ষক ছিলেন না। তিনি একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শান্তি বাহিনীর সহযোগী ছিলেন এবং পাক হানাদারদের বাজার করে দিতেন, যাহা এলাকাবাসি জানেন। তিনি জিয়াউর রহমানের বিএনপি ও এরশাদ সরকারের জাতীয় পার্টির আমলে সক্রিয় নেতা ছিলেন। ওই সময় বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ বিরোধী বক্তব্য রাখার কারণে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের দ্বারা ১৯৮৫ সালের উপজেলা নির্বাচনে, ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে ও ৯০ এর গণআন্দোলনে গনপিটুনির শিকার হন।

তিনি একজন ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত আসামি। রামু খিজারী বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জনৈক ছাত্রীকে ধর্ষণ করিলে এলাকাবাসি তাকে হাতেনাতে ধরে গণধোলাই দেয়। এঘটনার কারণে পরবর্তীতে ওই ছাত্রীর পরপর চার বার বিয়ে ভেঙ্গে যায়। উখিয়ারঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও অনুরুপ ঘটনায় অভিযুক্ত হয়ে গণধোলাইর শিকার হন। তৎকালীন খালেদা জিয়া সরকারের আমলে বিএনপির নেতাদের মাধ্যমে তিনি সাজা ভোগ না করে সুবিধা অর্জন করেন। তিনি বর্তমানে বিএনপির সাবেক সাংসদের স্কুলের শিক্ষক। তাকে অন্য কেউ জায়গা দেয় নাই বলে বিএনপি নেতার আশ্রয়ে আছেন।

মুলতঃ সেই দিনের ঘটনার সুত্রপাত হলো ঢাকাস্থ রামু সমিতির কার্যকরি সভায় এক সদস্য সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের অনুপস্থিতির কথা বলিলে আমি দাওয়াত পাই নাই বলে আসতে পারিনা। একদিন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে: কর্নেল(অবঃ) ফোরকান আহমদ সাহেব আমাকে রামু সমিতির অনুষ্ঠানের কথা বলিলে আমি লজ্জা পাই, কারণ আমাকে দাওয়াত করা হয় নাই। অথচ ফোরকান সাহেব অতিথি হয়ে সব বিষয়ে জানেন। আমার বক্তব্যের পরে ঢাকাস্থ রামু সমিতির সভাপতি নুর মোহাম্মদ ও পোষ্ট অফিসের সাবেক ডিজি আব্দুল মোমেন চৌধুরী তাদের বক্তব্যে বিষয়টি আর ভুল হবেনা বলে সুরাহা দেন।

উক্ত কমিটির সেক্রেটারি সুজন শর্মা বিষয়টি কর্নেল ফোরকান সাহেবকে বলেন যে, উনাকে দাওয়াত করাতে আমি সুজনকে নাজেহাল করেছি। এই মিথ্যা বিষয় নিয়ে ফোরকান সাহেব মনক্ষুন্ন হয়ে মিথ্যা অজুহাতে আমার উপর রাগ দেখান। এই বিষয়টি নিয়ে আমি সুজন শর্মার পিতা সুনীল শর্মাকে বলি- আপনার ছেলে, আমি এবং ফোরকান সাহেবের মধ্যে যে তিক্ততা শুরু করেছে এগুলো বন্ধ করতে বলুন। বিষয়টি অনেক মানুষের সামনে ঘটলেও তাকে গলাধাক্কা দেয়া হয়েছে এ কথা কেউ বলতে পারবে না। মুলত সে আওয়ামী বিরোধী লোক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিলকে তাল বানিয়ে বিএনপি ও আমার প্রতিপক্ষদের অপরাজনীতি করার সুযোগ করে দিচ্ছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শান্তি বাহিনী,সহযোগী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist