ছাদে উড়োজাহাজ বানালেন পাইলট
মুম্বাইয়ের এক তরুণ পাইলট আমোল যাদবের স্বপ্ন অনেক বড়। আজ থেকে সাত বছর আগে আমোল একদিন তার পরিবার আর বন্ধুদের কাছে ঘোষণা করলেন তিনি একটা উড়োজাহাজ বানাবেন। তাও আবার বাড়ির ছাদে। বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যরা প্রশ্ন করলেন, যদি উড়োজাহাজ বানিয়েও ফেল তবে সেটা ছাদ থেকে নামাবে কীভাবে? আমোল উত্তর দিলেন, ‘তা তো জানি না’।
১৯ সদস্যের যাদব পরিবারের বাস মুম্বাইয়ের এক পাঁচতলা বাড়িতে, যে বাড়িতে লিফটও নেই। ফলে যত যন্ত্রপাতি-লেদ মেশিন, কমপ্রেসর, ঝালাই মেশিন এবং একটা ১৮০ কেজি ওজনের ইঞ্জিনসহ সবকিছু বাড়ির সরু সিঁড়ি দিয়ে ছাদের ওপর ওঠানো হলো। শুরু করে দিলেন উড়োজাহাজ বানানোর কাজ। একটা টেনিস কোর্টের অর্ধেকেরও ছোট মাপের সেই ছাদে নিজের দলবল নিয়ে কাজ করেছেন আমোল। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৈরি হলো তার ছয় আসনের সত্যিকারের উড়োজাহাজ।
আমোল বলেন, তার এই উড়োজাহাজের ইঞ্জিন এত শক্তিশালী যে তা প্রায় ৩,৯২০ মিটার (১৩ হাজার ফুট) উঁচুতে উঠতে পারে। একবারে দুই হাজার কিমি দূরত্ব পার হওয়ার মতো জ্বালানি রাখা যায় এর ট্যাঙ্কে। বিমানটি পরীক্ষার জন্য মহারাষ্ট্রের একটি বিমান ঘাঁটিতে নেওয়া হয়েছে। ৪১ বছর বয়স্ক আমোল বলেন, ‘এরপর আমাদের কাজ ছিল প্লেনটাকে মাটিতে নামিয়ে আনা আর সবাইকে দেখানো। ভারত সরকার সে সময় ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নামে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করে যেখানে আমোল তার উড়োজাহাজ দেখানোর আবেদন করেন আয়োজকদের কাছে। কিন্তু অনুমতি পাওয়া যায়নি। আয়োজকরা বলেছিলেন, এ উড়োজাহাজটি প্রদর্শনের মতো যথেষ্ট জায়গা নেই।
অতঃপর ভাইদের সহায়তায় নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ‘ঘরে বানানো উড়োজাহাজের উপকারিতা’ বিষয়ে আলোচনা করে বান্দ্রার কনভেনশন মাঠে একটু জায়গা জোগাড় করেন আমোল। পরে সেই উড়োজাহাজের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খুলে আলাদা করে নিয়ে রাস্তায় নামানো হলো। দুটি ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো প্রদর্শনীর মাঠে এবং তারপর আবার জোড়া লাগানো হলো। প্রদর্শনী শুরু হলে কৌতূহলী দর্শকরা ভিড় করে দেখল। আমোল বলেন, ভারতের প্রথম নিজস্ব উড়োজাহাজ বানাতে প্রস্তুত তিনি। বিনিয়োগকারীরাও যথেষ্ট উৎসাহী বলে জানান তিনি। ভারতের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি জানিয়েছে, ‘নকশার মান এবং অপেশাদার-নির্মিত যাত্রীবাহী বিমানকে আরো উন্নত করতে হবে।’
পিডিএসও/তাজ