reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ জুন, ২০১৭

পাঁচতলা থেকে পড়েও বেঁচে গেল শিশু!

পাঁচতলা থেকে পড়েও বেঁচে গেল এক শিশু! গল্প নয়, এটা বাস্তব। আর এভাবে বেঁচে যাওয়া আড়াই বছরের শিশুটিকে দেখতে ভিড় জমেছে এয়ারপোর্ট আড়াই নম্বর গেটের মতিলাল কলোনির পার্পল গ্লো আবাসনে। আনন্দে আবাসনের ৫৮টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা বিশেষ উৎসবের আয়োজন করেছেন। সেখানে থাকছে নাচ-গান-খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা।

দিন পাঁচেক হাসপাতালে কাটিয়ে গত রোববার রথযাত্রার দিন আড়াই বছরের গুনগুন বাড়ি ফেরার পর মিষ্টিমুখ হয়েছে তার ফ্ল্যাটে এবং পাড়ায়। চিকিৎসকরা বলছেন, পাঁচতলা থেকে নিচে পড়ে এক বোতল রক্তও লাগল না, মাত্র পাঁচদিনের মধ্যে আহত হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি চলে গেল, এমন ঘটনা বিরল।

অ্যাপোলো গ্লেনেগেলস হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানা, পাঁচতলার ওপর থেকে গুনগুন পড়েছিল একটি পাঁচিলের উপরে। তবে উপুর হয়ে। উপুর হয়ে পড়ায় মাথায় তেমন আঘাত লাগেনি। আর পাঁচিল থকে নিচে পড়ার সময় চিৎ হয়ে পড়েছিল মেয়েটি। কিন্তু তার মাথা বাঁচিয়ে দিয়েছে আবাসনের নিচে ছড়িয়ে থাকা কিছু থার্মোকলের প্যাকেট। অত উঁচু থেকে উপুড় হয়ে পড়াতেও কীভাবে প্রায় অক্ষত থাকল গুনগুন? ওর তো বুকের পাঁজর ভেঙে যাওয়ার কথা, ফুসফুসও ফেটে যেতে পারত।

হাসপাতালে গুনগুনের চিকিৎসক শিশু শল্য চিকিৎসক বৈশালী শ্রীবাস্তব ও ইনটেনসিভ কেয়ার চিকিৎসক অভিষেক পোদ্দার জানান, শিশুটির ফুসফুস, প্লীহা, অন্ত্রে ধাক্কা লেগে শরীরের ভিতরে জায়গায় জায়গায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। কাঁধের হাড়, শিরদাঁড়ার একটি হাড় ভেঙেছে। কিন্তু কোনও আঘাতই খুব গুরুতর নয়।

ফিজিক্যাল মেডিসিন চিকিৎসক রাজেশ প্রামাণিক, মৌলিমাধব ঘটকদের মতে, বাচ্চাদের শরীরে হাড় নরম, আঘাত প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং স্থিতিস্থাপকতা বেশি। ফলে তাদের চোট লাগার আশঙ্কা কম থাকে। তবে পাঁচ তলা থেকে পড়ে এমনভাবে বেঁচে যাওয়াও বিরল।

সে দিনের ঘটনার কথা মনে করলে এখনও কেঁপে উঠছেন তার বাবা-মা সঙ্গম আর সঙ্গীতা গুপ্ত। আদতে জামশেদপুরের বাসিন্দা গুপ্ত পরিবার এই ফ্ল্যাটে এসেছেন বছর পাঁচেক আগে। গত ২১ জুনের কথা। সকাল এগারোটা নাগাদ ফ্ল্যাটে খেলছিল গুনগুন। সঙ্গম আর সঙ্গীতাও ছিলেন। সঙ্গম জানান, ফ্ল্যাটের দক্ষিণ দিকের ছোট বারান্দাটা গ্রিল দিয়ে ঘেরা। গ্রিলের একটা অংশ জামাকাপড় শুকোনোর জন্য খোলা যায়। সেদিন ওই অংশটা যে খোলা রয়েছে, তা আমরা খেয়াল করিনি। বারান্দার বেসিনে মুখ ধুচ্ছিলাম। কোন ফাঁকে গুনগুন নিঃশব্দে এসে গ্রিল বেয়ে উঠে ওই খোলা অংশে পৌঁছে গিয়েছে।’

হাত বাড়িয়ে ধরার আগেই চোখের সামনে আমার মেয়ে গ্রিলের ওই খোলা জায়গাটা দিয়ে পড়ে গেল। আমার চোখের সামনে সব কেমন ধূসর হয়ে যাচ্ছিল। কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না। সঙ্গমের চিৎকার শুনে আশপাশের ফ্ল্যাটের লোক ছুটে এসেছিলেন। গুনগুন ততক্ষণে আছড়ে পড়েছে নিচের পাঁচিলের ওপর। সেখান থেকে মাটিতে। নিচে বসেছিলেন নিরাপত্তাকর্মী শঙ্কর ভৌমিক।

তার কথায়, হঠাৎ ধুপ করে ভারি কোনও জিনিস পড়ার আওয়াজ পেলাম। ওপর থেকে চিৎকারও শুনলাম। তাড়াতাড়ি গিয়ে দেখি, বাচ্চাটা অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছে। কোলে করে উঠিয়ে আনলাম। ও বেঁচে ফিরেছে এখনও ভাবতে পারছি না। ছোট্ট গুনগুন এখন বাড়ি ফিরে দিব্যি গান গাইছে, ছড়া বলছে আর লোকজন দেখলেই হাত তুলে আশ্বাসের ভঙ্গিতে আধো গলায় বলছে—সব ঠিক আছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শিশু,ভারত,বিচিত্র খবর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist