স্রেফ হাওয়া খেয়ে বাঁচা যোগী!
স্রেফ হাওয়া। কোনো খাবার নয়, পানিও নয়। ৭০ বছর ধরে নাকি কিছু না খেয়েই রয়েছেন। তিনি পাওয়াহারি যোগী, পাওয়াহারি মানে পবন আহারি। মানে বাতাস খেয়ে বাঁচেন। শুধু নিয়মিত যোগাসন করেই নাকি ‘ফিট’ এই যোগী। তিনি নাকি এভাবেই জীবনের ৮৮ বছর পার করে দিয়েছেন।
ওই যোগীর পরনে লাল কাপড়। কপালে লাল টিপ। এক মুখ দাড়িগোঁফ। গলায় স্বর্ণের চেইন। রয়েছে দেশ-বিদেশের অসংখ্য ভক্ত। যে কোনো সমস্যায় পড়লে, এই পাওহারি বাবা নাকি তার সমাধান করে দেন। গুজরাতের মেহসানায়, চারোদ বা চারাদা গ্রামের এই বাসিন্দা এই যোগীর আসল নাম প্রহ্লাদ জানী। তার দাবি, সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি কিছু না খেয়েই রয়েছেন। ১৮ বছরের বয়সেই নাকি ঠিক করে নিয়েছিলেন, জীবনটা অন্যরকমভাবেই কাটাবেন। তখনই শুরু হয় যোগাসন ও বায়ুসাধনা।
আগেও হইচই হয়েছে এই বাবাকে ঘিরে। ভারতে এপিজে আবদুল কালাম রাষ্ট্রপতি পদে থাকাকালীন, ২০১০ সালে দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা (ডিআরডিও) ও কেন্দ্রীয় সরকারি গবেষণাগারের বিজ্ঞানীরা টানা ১৫ দিন ধরে নজরদারি চালিয়েছিলেন প্রহ্লাদের উপর।
এমআরআই, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, এক্স-রে অনেক কিছু করা হয়েছে। সূর্যের আলোয় টানা বসিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে তার শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন। তার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে মাপা হয়েছে লেপটিনের পরিমাণ। কারণ এই মাস্টার হরমোন লেপটিনই নিয়ন্ত্রণ করে দেহের ওজন। দেখার চেষ্টা হয়েছিল, এই লেপটিনের কোনোরকম এদিকওদিক হচ্ছে কি না প্রহ্লাদের শরীরে। যাকে বলে ‘এক্সট্রিম অ্যাডপটেশন’। কিন্তু সবমিলিয়ে রহস্যভেদ হয়নি।
তবে আমেরিকার হেনরিফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পারিজাত সেন বলেন, এটা একেবারে ভাঁওতাবাজি। বাঁচতে গেলে সামান্য কিছু হলেও খেতে হবে। শরীরের সিস্টেম কিছুদিন পরই আর সাপোর্ট করবে না। এই পাওহারি বাবা-টাবা স্রেফ গল্প।
পিডিএসও/তাজ