নিজস্ব প্রতিবেদক
জব্দ হতে পারে ৪ মুঠোফোন অপারেটরের ব্যাংক হিসাব
সিম রিপ্লেসমেন্টের নামে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে দেশের চার বেসরকারি মুঠোফোন অপারেটরের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)-মূল্য সংযোজন কর শাখা এ দাবিনামা জারি করেছে।
চূড়ান্ত দাবিনামা জারির পর বকেয়া রাজস্ব পরিশোধে ব্যর্থ হলে আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে চার মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হতে পারে বলে জানা গেছে। চার মুঠোফোন অপারেটরের মধ্যে গ্রামীণফোন লিমিটেড সবচেয়ে বেশি ৩৭৮ কোটি ৯৫ লাখ ৩৭ হাজার ৮২০ টাকা ২২ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
এর পরে বাংলালিংক ১৬৮ কোটি টাকা, ৯১ হাজার ৪৯ হাজার ৫২ টাকা ৪৪ পয়সা, রবি ২৮৫ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার ৫৩৫ টাকা ৭ পয়সা এবং এয়ারটেলের ৫০ কোটি ২৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩২২ টাকা ৫৯ পয়সা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
এ বিষয়ে এলটিইউর এক কর্মকর্তা বলেন, মূসক আইন, ১৯৯১-এর ধারা ৫৫-এর উপধারা (৩) অনুযায়ী চূড়ান্ত দাবিনামা জারি ও কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মূসক অনুযায়ী চূড়ান্ত দাবিনামা অনুযায়ী মুঠোফোন কোম্পানি বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ ও আপিল করতে তিন মাস সময় পাবে। এর মধ্যে আপিল করতে হলে বকেয়া রাজস্বের ১০ শতাংশ জমা দিতে হবে। বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ না করলে ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ করা হবে বলে জানান তিনি।
এলটিইউ সূত্র জানায়, বেসরকারি মুঠোফোন অপারেটরদের সিম রিপ্লেসমেন্টের নামে নতুন সিম বিক্রির মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে কি না খতিয়ে দেখতে এনবিআর ২০১৩ সালের ২৮ জুলাই একটি নির্দেশনা জারি করে। নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর এলটিইউর (ভ্যাট) কমিশনারকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে। পরে এনবিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি এলটিইউর (ভ্যাট) অতিরিক্ত কমিশনারকে আহ্বায়ক করে চার মুঠোফোন অপারেটর, অ্যামটব ও বিটিআরসির প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ৫ সদস্যের কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। কমিটি সিম রিপ্লেসমেন্টের তথ্য প্রমাণসহ উপস্থাপন করতে আবার চিঠি দেয়। কিন্তু চারটি প্রতিষ্ঠান তা দেখাতে ব্যর্থ হয়। এতে কমিটি নিশ্চিত হয় চারটি প্রতিষ্ঠান সিম রিপ্লেসমেন্টের আড়ালে নতুন সিম বিক্রি করে রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, পরে চারটি মুঠোফোন অপারেটরকে পৃথকভাবে বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ ও কারণ দর্শানোর জন্য চারটি প্রতিষ্ঠানটি নোটিস জারি করা হয়। চারটি কোম্পানি কারণ দর্শানোর জবাব দিতে সময় প্রার্থনা করে। কিন্তু কয়েক দফা সময় দিয়েও চারটি প্রতিষ্ঠান শুনানিতে অংশ নেয়নি। পরে তারা জানায় এনবিআর, বিটিআরসি, মুঠোফোন অপারেটর ও অ্যামটবকে নিয়ে এ বিষয়ে শুনানির জন্য এলটিইউকে অনুরোধ জানায়।
পিডিএসও/তাজ