reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ অক্টোবর, ২০১৭

লজ্জায় আমরা ডুবছি : সেতুমন্ত্রী

বিভিন্ন নেতিবাচক কাজের সমালোচনা করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শুধু কি জলাবদ্ধতার পানিতে ডুবছি? বিভিন্ন ধরনের লজ্জায় আমরা ডুবছি। সবাইকে বলব মানসিকতার পরিবর্তন করতে। লজ্জার বিষয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দিয়েও উল্টো পথে যাওয়ার খারাপ প্র্যাকটিস বন্ধ করতে পারিনি। এই কি আমাদের শিক্ষা, এই শিক্ষার আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে সড়ক বিভাগের সচিব এম এন সিদ্দিক, বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মইনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সরকার জাতীয়ভাবে নিরাপদ সড়ক দিবস পালন করছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘সাবধানে চালাব গাড়ি, নিরাপদে ফিরব বাড়ি’। এই দিবস সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই দিবস পালনে অর্থ মন্ত্রণালয় ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এ রকম দায়সারা দিবস পালন করে লাভ নেই। নামকাওয়াস্তে একটা দিবস সরকার ঘোষণা করল, কোনো রকমে এটা পালন করলাম। এটা অর্থহীন, মূল্যহীন। এই রকম দিবস পালনের পক্ষপাতী আমি নই। মানুষকে সচেতন করার জন্য এই দিবসকে ঢাকঢোল পিটিয়ে করতে হবে। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সমন্বিতভাবে, পরিকল্পিতভাবে যানজটের বিরুদ্ধে, দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে রাস্তার ও পরিবহনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সেমিনারে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, পথচারী ও মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা বাড়ছে। হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশ ঠিকমতো কাজ করছে না। তবে কিছু উদ্যোগ প্রশংসনীয়। দেশের জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের কাজগুলো করছেন না। আমার দাবি, নিরাপদ সড়কের জন্য জনপ্রতিনিধিরা যেন তাঁদের নিজ নিজ এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে প্রচারণা করেন। শুধু এক দিনের জন্য এ দিবস নয়। আমাদের মানসিকতাও পরিবর্তন করতে হবে। আসুন, আমাদের যার যার দায়িত্ব পালন করি।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আহসান বলেন, মহাসড়ক শুধু নির্মাণ করলে চলবে না, দরকার মহাসড়কের নিরাপদ ব্যবস্থাপনা। সড়ক যেন মরণফাঁদ- এ রকম শিরোনাম মানুষ আর দেখতে চায় না। ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে অর্ধেকে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে হতাহত মানুষের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। ফুটওভারব্রিজ যেগুলো আছে, তা ব্যবহৃত হয় না। তাই পথচারীদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হতাহত মানুষের সংখ্যা কমিয়ে আনা যাবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার কথা কেউ শোনেননি। এখন দুদক রাস্তায় ধরেছে। ধরা হবে, তবু ছাড়া হবে না। এই রাস্তা নিরাপদ করতে হবে। আমাদের বাঁচতে হলে ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ সড়ক আমরা গড়ে তুলবই। তিনি বলেন, কী করে এত আনফিট গাড়ি, লক্কড়ঝক্কড় মার্কা গাড়ি রাস্তায় আসে। বাংলাদেশের এত অর্জন, সমৃদ্ধি, সেই দেশের রাজধানীতে কয়টা গাড়ির চেহারা সুন্দর আছে? এত অর্জনের দেশ ও বিপুল সম্ভাবনার দেশের রাজধানী ঢাকা শহরের এত গরিব গরিব গাড়ি গ্রামেও নেই। আপনারা দেশকে ছোট করছেন। ঢাকা শহরে এসে বিদেশিরা আমাদের লজ্জা দিচ্ছে আমাদের যানজটের জন্য, আমাদের ফিটনেসবিহীন গাড়ির জন্য।

জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, জনপ্রতিনিধিদের এলাকায় দলীয় কর্মীরা হেলমেট ছাড়া এক মোটরসাইকেলে তিনজন বসে আলেক্সান্ডারের মতো রাস্তায় আসেন। এগুলো আমাদের কতজন জনপ্রতিনিধি খেয়াল করেন? জনপ্রতিনিধিরা ঢাকা থেকে এলাকায় গেলে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য মাইলের পর মাইল বন্ধ করে রাখেন। একদিকে পেট্রল খরচ করছে, অন্যদিকে নিজেরা সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করছে।

উল্টো পথে যান চলাচল প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, অসাধারণ রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, অসাধারণ মানুষ, অসাধারণ আইনজীবী, অসাধারণ সাংবাদিক- আমরা কেউ রাস্তায় আইন মানতে চাই না। সাংবাদিক নয়, তবু সাংবাদিকের স্টিকার। কত যে সব ভুয়া। ভরে গেছে ভুয়ায়। জনপ্রতিনিধি নয়, এমপি নয়, তবু নীলক্ষেত মার্কা ভুয়া স্টিকারে চলেন তারা।

পিডিএসও/মুস্তাফিজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সেতুমন্ত্রী,আমরা ডুবছি,লজ্জা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist