নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ অক্টোবর, ২০১৭

চালের দাম এক ধাপ কমিয়ে থেমে গেছেন মিল মালিকরা

দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের নানামুখী ব্যবস্থা গ্রহণ ও অভিযান পরিচালনার চাপে চালের দাম এক ধাপ কমিয়ে থেমে গেছেন দেশীয় মিল মালিকরা। বিক্রেতারা জানান, ২০ সেপ্টেম্বরের দিকে মিল মালিকেরা প্রথম ধাপে চালের দাম বস্তায় দেড়শ টাকার মতো কমিয়েছিলেন। পরের সপ্তাহে কমেছে আরো ২৫ টাকা। এরপর চালের দাম আর কমেনি।

এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন ফসল উঠে আসায় চালের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে মিল গেটে গত এক মাসে চালের দাম বেশ কমেছে। তবে রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বাড়তি দামের লোভে অনেক চাল মজুদ রেখেছেন। এসব মজুদদার ব্যবসায়ী নতুন চাল না কিনে তুলনামূলক বেশি দামে কেনা আগের চাল বিক্রি করছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি পর্যায়ে চালের শুল্ক প্রত্যাহারের ফলে পণ্যটির দাম কমেছে সামান্য। সরকারের পক্ষ থেকে খোলাবাজারে চাল বিক্রি হলেও দাম তুলনামূলক বেশি। এ ছাড়া খোলাবাজারে বিক্রি হওয়া চালের মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এতে সরকারের ওএমএস কার্যক্রম চালের দাম নিয়ন্ত্রণে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। চালের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যবসায়ীরা চটের বস্তার পরিবর্তে প্লাস্টিক ব্যাগে পরিবহন, ভ্রাম্যমাণ আদালত থেকে অব্যাহতিসহ বেশকিছু সুযোগ নিয়েছেন। এ প্রতিশ্রুতিও রাখেননি ব্যবসায়ীরা।

শনিবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এলাকা ভেদে খুচরা বাজারে এখনো মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকায়। আর পাইকারিতে এই চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৯০০ টাকায়।

বাজারের সর্বশেষ পরিস্থিতি যাচাই করে দেখা যায়, মিনিকেটর মতোই বিআর আটাশ ও পাইজাম বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। খুচরায় বিআর আটাশ ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ৬০০ টাকা, আর পাইজাম ২ হাজার ৫০০ টাকা করে। তবে বাজারে ভারতীয় চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় মানুষ কিছুটা কম দামে মোটা চাল পাচ্ছে। ভারতীয় মোটা চালের ৫০ কেজির বস্তা এখন ২ হাজার ২৫০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা। ভারতীয় আটাশ চালও ২ হাজার ৩৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের সিটি জেনারেল স্টোরের বিক্রয়কর্মী রাসেল জানান, খুচরায় মিনিকেট কেজি প্রতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা, ভারতীয় আটাশ চাল ৪৭ টাকা, দেশি আটাশ চাল ৫৪ টাকা এবং ভারতীয় মোটা চাল (স্বর্ণা) ৫৪ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সর্বশেষ এক মাসের তথ্যে আরো দেখা যায়, ১২ সেপ্টেম্বর প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর এক মাসের একটু বেশি সময় ধরে ৪৪ থেকে ৫২ টাকার মধ্যেই ওঠানামা করেছে মোটা চালের দাম। প্রায় এক মাস আগে চিকন চাল বিক্রি হয়েছে ৫৬ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে। তা এখন চিকন চাল বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৬৮ টাকায়। মাসজুড়ে চিকন চালের দামও ওঠানামা করেছে।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের চালের আড়তে মেসার্স লক্ষ্মী ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক হারুন অর রশিদ বলেন, আমদানি পর্যায় ও মিলগেট কিংবা পাইকারি পর্যায়ে দাম কমলেও এর প্রভাব খুচরা বাজারে সেভাবে পড়বে না এবং পড়ার তেমন সম্ভাবনাও নেই। কারণ বড় কয়েকটি ছাড়া রাজধানীর বেশিরভাগ কাঁচাবাজার বিচ্ছিন্নভাবে গড়ে উঠেছে। আর বাজারের চেয়ে অলিগলিতে দোকানের সংখ্যা আরো বেশি। যা মনিটরিং করার লোক নেই। মনিটরিং না থাকলে কোনোভাবেই দাম কমানো বা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না।

এ ছাড়া ভোক্তারাও খুব একটা দরদাম করেন না। বিক্রেতা যে দাম চাচ্ছেন, সেই দামেই নিচ্ছেন ক্রেতারা। তাই দাম কমার সুফল কখনোই সঠিকভাবে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাবে না বলেও জানান তিনি।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চালের দাম,মিল মালিক,বাজার,চালের মূল্য বৃদ্ধি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist