চিনির দাম : বিশ্ববাজারে কমলেও দেশে প্রভাব পড়েনি
বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমলেও এর প্রভাব পড়ছে না দেশে। ইতোমধ্যেই লন্ডন ও নিউইয়র্কের বাজারে পরিশোধিত চিনির দাম বেশ কমেছে। কিন্তু পবিত্র মাহে রজমানের আগে দেশের বাজারে বেড়ে যাওয় চিনির দাম এখনও সেই অবস্থাতেই আছে। অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাইকারি বাজারে সামান্য কমলেও খুচরা মূল্যে এর কোন প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। অবশ্য নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির পাইকারি দরের সঙ্গে খুচরা দরের তফাতের পেছনে যৌক্তিক কোনো কারণ দেখাতে পারেননি কেউই। এর জন্য পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। একইভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দর নির্ধারণ ও বাজার পর্যব্ক্ষেণের দায়িত্বে থাকা সংস্থার পক্ষ থেকেও কোনো তৎপরতা আছে বলেও কারও জানা নেই। এই বিষয়ে যৌক্তিক কোনো ব্যাখ্যাও দেয়নি ট্যারিফ কমিশন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, মূলত ইউরোপের দেশগুলোয় পণ্যটির সম্মিলিত উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনার খবরে মঙ্গলবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) পণ্যটির দাম কমেছে। আইসিইতে এদিন অক্টোবরে সরবরাহের চুক্তিতে প্রতি পাউন্ড অপরিশোধিত চিনি বিক্রি হয় ১৩ দশমিক ৫৬ সেন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় দশমিক শূন্য ৮ সেন্ট বা দশমিক ৫৯ শতাংশ কম। গত ১৩ জুলাইয়ের পর আইসিইতে এটাই অপরিশোধিত চিনির সর্বনিম্ন দাম।
অন্যদিকে পরিশোধিত চিনির দামও কমেছে আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৪২ শতাংশ। এদিন আইসিইতে অক্টোবরে সরবরাহের চুক্তিতে প্রতি টন পরিশোধিত চিনি বিক্রি হয় ৩৭৬ ডলার ৩০ সেন্ট বা ৩০ হাজার ১০৪ টাকায় (প্রতি ডলার ৮০ টাকা ধরে), যা আগের দিনের তুলনায় ১ ডলার ৬০ সেন্ট কম।
গত বছরের ফেব্রুয়ারির পর এটা পণ্যটির দামের সর্বনিম্নের কাছাকাছি অবস্থান। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (্ইইউ) দেশগুলোয় চলতি মৌসুমে আখ উৎপাদনের সম্মিলিত পরিমাণ আগের মৌসুমের তুলনায় ২০ শতাংশ বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন (ইসি)। এর জের ধরে এসব দেশে চিনির উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় বাড়তে পারে। এ খবরের জের ধরে বাজারে বাড়তি সরবরাহের সম্ভাবনায় পণ্যটির দাম নিম্নমুখী হয়েছে।
পক্ষান্তরে আইসিইতে আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭০ সেন্ট কমেছে অ্যারাবিকা কফির দাম। এদিন সেপ্টেম্বরে সরবরাহের চুক্তিতে প্রতি পাউন্ড অ্যারাবিকা কফি বিক্রি হয় ১ হাজার ৪১৯ ডলারে, যা আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৪৯ শতাংশ কম। সেপ্টেম্বরে সরবরাহের চুক্তিতে প্রতি টন রোবাস্তা কফির দাম কমেছে ৩ ডলার। এদিন পণ্যটি প্রতি টন বিক্রি হয় ২ হাজার ১৩৩ ডলার বা ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৪০ টাকায়, যা আগের দিনের তুলনায় দশমিক ১৪ শতাংশ কম।
পক্ষান্তরে রমজানে দাম বাড়া পর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজধানীর পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৬-৬৮ এবং খুচরা ৭০-৭২ টাকায়। অথচ রোজার আগে দাম ছিল ৫৭-৫৮ টাকা। বাংলাদেশ চিনি ব্যাবসায়ী সমিতির সহসভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা মিল থেকে চিনি কিনি ৫৭ টাকায়। আমি যতদূর জানি, গতকালও পাইকারি ব্যাবসায়ীরা ৫৮ টাকা কেজি দরে চিনি বিক্রি করেছেন। তবে খুচরা বিক্রেতাদের দাবি নাকচ করে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, খরচ ও লাভ যোগ করেও খুচরা বাজারে চিনির দাম হওয়া উচিত সর্বোচ্চ ৬২ টাকা।পিডিএসও/মুস্তাফিজ