সংসদে প্রধানমন্ত্রী
‘ভ্যাট আইনের কার্যকারিতা স্থগিত’
ভ্যাট আইনের কার্যকারিতা দুই বছরের জন্য স্থগিত করছে সরকার। বুধবার সংসদে বাজেট আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটা নিয়ে যেহেতু নানা ধরনের কথা হচ্ছে, এটা আগের মতোই থাকবে।
আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকরের পক্ষে অনড় ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সব পণ্য বিক্রির উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরেই ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট গত ১ জুন সংসদে প্রস্তাব করেছিলেন তিনি।
ব্যবসায়ীদের আপত্তি এবং জনসাধারণের উদ্বেগের মধ্যে সরকারের শেষ সময়ে এসে ভ্যাট আইন কার্যকরের বিরোধিতা আসে সরকারি দলের নেতা এমনকি মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্য থেকেও। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের দুই বছর আগে এই ভ্যাট আইন কার্যকর না করতে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যরা আহ্বান জানান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ বাজেট আলোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবসায়ীরা তাতে সাড়া দিচ্ছেন না। সেভাবেই করে দেবেন, আগামী দুই বছরের জন্য। বর্তমান পদ্ধতিতেই ভ্যাট আদায় বজায় রাখবেন। ফলে ২০১২ সালে প্রণীত ভ্যাট আইনটি আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকার আমলে আর কার্যকর হচ্ছে না।
বিশাল বাজেটের খরচ মেটাতে দুই লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা জনগণের কাছ থেকে কর ও শুল্ক হিসেবে আদায়ের পরিকল্পনা ছিল অর্থমন্ত্রীর। এরমধ্যে ৯১ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর থেকে আদায়ের লক্ষ্য ধরেছিলেন তিনি। ফলে এখন তার পরিকল্পনা দৃশ্যত বাধাগ্রস্ত হল।
বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী ভ্যাট আইন প্রণয়নের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, মূসক আইনটি ১৯৯১ সালে করা, ২০০৮ সালে সংশোধনের জন্য খসড়া তৈরি হয়। সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেই আইনটি আমরা করে দিই ২০১২ সালে। এখন সবাই ভুলেই গেছে যে আইনটি আমরা পাস করে দিয়েছিলাম।
এই ভ্যাট আইনটি কার্যকর করে ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নেয়ার পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু তখন ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে তা এক বছর পিছিয়ে দিয়েছিল সরকার, এখন আরও দুই বছর পেছাল।
এখন ব্যবসায়ীরা বিক্রির অনুপাতে ভ্যাট দিচ্ছেন না, যা নতুন আইনে দিতে হবে। এখন তারা বাৎসরিক নির্দিষ্ট একটি অঙ্ক ভ্যাট হিসেবে দিচ্ছেন। নতুন আইনে ভ্যাটের হিসাব বের করা ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের জন্য দুষ্কর হবে বলে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো দাবি করে আসছিল। অন্যদিকে ভোক্তা সংগঠন ক্যাব বলছিল, ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে গেলে বাজারে পণ্যমূল্য বাড়বে এবং তাতে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্রেতারা।
পিডিএসও/হেলাল