ঈদযাত্রা : শুরুতেই ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়
আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের আগাম টিকিট যারা কিনেছিলেন তারা আজ বুধবার থেকে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন। তবে শুরুতেই তাদের পড়তে হচ্ছে মারাত্মক শিডিউল ভোগান্তিতে। আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ট্রেন সময়মতো কমলাপুর থেকে ছেড়ে যায়নি। তবে কর্তৃপক্ষ এটাকে শিডিউল বিপর্যয় বলতে নারাজ। তাদের দাবি, এতগুলো ট্রেনের মধ্যে কয়েকটি ট্রেন কিছুটা বিলম্বে ছাড়তেই পারে। এটাকে শিডিউল বিপর্যয় বলা যাবে না। সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, এভাবে ট্রেনগুলো বিলম্বে ছাড়লে ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে শিডিউল বিপর্যয়ের মাত্রা বাড়তে পারে। এতে এবারো ট্রেনের ঈদযাত্রায় সঙ্গী হতে পারে ভোগান্তি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, আজ কমলাপুর স্টেশন থেকে সর্বমোট ৬৬টি ট্রেন ছেড়ে যওয়ার কথা রয়েছে। গত ১২ জুন বিক্রি করা অগ্রিম টিকিটের যাত্রীরা আজ যাচ্ছেন। আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত অগ্রিম টিকিটের ট্রেন ছাড়াও বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এসবের মধ্যে আছে দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ, চাঁদপুর স্পেশাল-১ চট্টগ্রাম- চাঁদপুর –চট্টগ্রাম, চাঁদপুর স্পেশাল-২ চট্টগ্রাম- চাঁদপুর -চট্টগ্রাম, রাজশাহী স্পেশাল রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী, পার্বতীপুর স্পেশাল পার্বতীপর-ঢাকা-পার্বতীপুর ২৩ থেকে ২৫ জুন ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই চলাচল করবে। এছাড়া শোলাকিয়া স্পেশাল-১ ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ- ভৈরববাজার, শোলাকিয়া স্পেশাল-২ ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ পবিত্র ঈদের দিন চলাচল করবে।
সকালে কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ১৪টি ট্রেন সময়মতো ছেড়ে যায়। তবে এরপর থেকে কয়েকটি ট্রেনের শিডিউলে দেখা দেয় মহা-বিপর্যয়। সকাল ৯ টায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে যায় এক ঘণ্টা দেরিতে। এরপর থেকে ১০টার পরের ট্রেনগুলোও এক দেড় ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে যায়। ঈসা খাঁ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেলা সাড়ে ১১টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি ৪৫ মিনিট বিলম্বে অর্থ্যাৎ ১২.১৫টায় ছেড়ে যায়। সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ১২টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি এক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। রাজশাহী ও চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেন দুটিও এক ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে যায় বলে জানান যাত্রীরা।
কমলাপুরে সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের জন্য অপেক্ষা করছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আশরাফ উদ্দিন। ট্রেনের দেরির কথা জানতে চাইলে ক্ষোভ প্রকাশ করে আশরাফ বলেন, ট্রেন ছাড়ার কথা ১২টায়, কিন্তু এখন একটা বাজতে চলল, তবুও ট্রেনের দেখা নাই। সপরিবারে যাচ্ছি বাড়িতে, দেখেন ছোট বাচ্চা নিয়ে কী ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। রাজশাহী এক্সপ্রেসে যাচ্ছেন সালমা আক্তার। তিনি বলেন, দূরপাল্লার যাত্রায় সীমাহীন ভোগান্তি আর যানজটের বিড়ম্বনার কথা চিন্তা করে ঈদের বেশ আগেই বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হচ্ছি। ভোগান্তি হচ্ছে, তবে কষ্ট হলেও বাড়ি পৌঁছাতে পারলে এই ভোগান্তির কথা আর মনে থাকে না।
প্রথম দিনের সময় বিপর্যয় নিয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় আমরা চেষ্টা করছি যেন সব ট্রেনই সময়মতো এসে সময়মতো ছেড়ে যায়। মানুষের ভোগান্তি এড়াতে সম্ভাব্য সবধরনের ব্যবস্থা আমরা নেব। তিনি বলেন, সকালে রংপুর এক্সপ্রেস একটু বিলম্বে পৌঁছে, তার ওপর একটি কোচ ড্যামেজ হয়ে যাওয়ায় সেটি ছাড়তে একটু বিলম্ব হয়।’ তিনি আরও বলেন, কমলাপুর থেকে ৬৬টি ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে, এর মধ্যে ২ একটি বিলম্ব হলে সেটাকে সিডিউল বিপর্যয় বলা যাবে না।পিডিএসও/মুস্তাফিজ