আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি ও সঞ্চয়পত্রের সুদ কমানোর প্রস্তাব
সংসদে মুহিতের কঠোর সমালোচনা
লাখ টাকার ওপর ব্যাংক হিসাবে আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি এবং সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর প্রস্তাব দেয়ায় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কঠোর সমালোচনা করেছেন সংসদ সদস্যরা। তীব্র সমালোচনা করেছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীও। এই ২ উদ্যোগে যে কয় টাকা আসবে তা সরকারের জন্য ‘পিনাট’ (বাদাম) এর মত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। বিশেষ করে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর প্রস্তাব নিয়ে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল আরও ঝাঁঝাল। তিনি বলেন, সমাজের অনেক শ্রেণির লোককে ভর্তুকি দিই। যা তাদের প্রাপ্য না। অথচ যাদের প্রাপ্ত, তাদের বঞ্চিত করতে যাচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা, আমরা যদি ঋণ খেলাপিদের বোঝা নিতে পারি, তাদের তোয়াজও করতে পারি, তাহলে কেন মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তের সামান্য বোঝা আমরা নেব না?
মতিয়া বলেন, এদের একটাই প্রবলেম, এদের কোনো প্রেসার গ্রুপ নাই, যদি থাকতো, তাদের কনসেশন আদায় করে নিতে পারত্। সেইখানেই এদের পক্ষ হয়ে আমি কথা বলব। তিনি বলেন, এর থেকে সরকার কত টাকা পাবে? হিসাবে দেখা যায়, ৮০-৮৫ লক্ষ লোক এই ট্যাক্স দেয় আর ৭০-৭৫ লাখ লোকই এক লাখ এক টাকা থেকে ১০ লাখ টাকার আমানতকারী। এরাই দেবে ২০০ কোটি টাকার ওপর। এই টাকার জন্য কি আমরা এই বিপুলসংখ্যক লোক, যাদের আয় আমরা কমিয়ে দেব?। ওনি (অর্থমন্ত্রী) জনগণের ওপর এই বোঝা চাপিয়ে তিনি কি যক্ষের ধন পাহারা দেবেন? এই প্রশ্নটা আমি রাখতে চাই। আমার মতে এই প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, এই প্রস্তাবটা তুলে নিলে সরকারের ক্ষতি হবে মাত্র ৩৫৫ কোটি টাকা। এটা তো মাননীয় অর্থমন্ত্রীর জন্য একটা পিনাট আমি মনে করি। সেখানে তিনি কেন হাত দিচ্ছেন, আমি বুঝতে পারি না। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ব্যাংক আমানতের সুদ নিম্ন পর্যায়ে, মূল্যস্ফীতির নিচে ব্যাংকের সুদ। শুধু তাই নয়, প্রাপ্ত সুদের ওপরে ১০-১৫ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর কেটে নেয়া হয়। রয়েছে সার্ভিস চার্জ। এর ওপর চালু আছে আবগারি শুল্ক। সেই আবগারি শুল্ক যদি বৃদ্ধি করা হয়, তা মরার ওপর খাড়ার ঘা হবে।
এক লাখ টাকার ওপরের ব্যাংক হিসাবধারীরা যথেষ্ট সম্পদশালী-অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যেরও কঠোর সমালোচনা করেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, কী করে আমরা এদেরকে বিত্তবান বলবো। দুই টাকার পর পাঁচ টাকার কারেন্সি সরকার যেখানে উঠিয়ে নিচ্ছে তখন এই লাখ টাকা তো মহারানি ভিক্টোরিয়ার আমলের টাকা নয়। এই টাকা থাকলে ঘিয়ের বাতি জ্বালাত, তাদের সাথে আমাদের তুলনা করে লাভ নাই। প্রসঙ্গত আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী এক লাখ। টাকার ঊর্ধ্ব থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবের ওপর আবগারি শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করার প্রস্তাব করেছেন।পিডিএসও/মুস্তাফিজ