প্লাস্টিক শিল্প পণ্যকে বহুমুখীকরণ করতে হবে : শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বিশ্ববাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্লাস্টিক শিল্প পণ্যের বৈচিত্র্য ও বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমানে সারা বিশ্বেই ফ্যাশনেবল ও বাহারী ডিজাইনের প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদা পূরণের জন্য প্লাস্টিক শিল্প পণ্য বৈচিত্রকরণ ও মূল্য সংযোজনের উদ্যোগ নিতে হবে। এর মাধ্যমে রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণেরও সুযোগ তৈরি হবে।
বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চার দিনব্যাপী ‘১২তম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক মেলার’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, কাঙ্খিত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় প্লাস্টিক শিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণেও সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্লাস্টিক শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বিকাশমান শিল্পখাত। কারণ কাঠের বিকল্প হিসেবে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বাংলাদেশে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে।
বিশ্বের সকল দেশেই এখন প্লাস্টিক পণ্য অত্যন্ত জনপ্রিয়- এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান এ চাহিদার যোগান দিতে দেশেই আন্তর্জাতিক মানের প্লাস্টিক শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠছে। ইতোমধ্যে দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫,০৩০টি প্লাস্টিক ইন্ডাষ্ট্রি হয়েছে।
এ খাতে সরাসরি ৫ লাখ এবং পরোক্ষভাবে ৭ লাখ লোক কাজ করছে বলে জানান শিল্পমন্ত্রী।
আমু বলেন, পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিক পণ্যের উৎপাদন বাড়িয়ে নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগও রয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শুরু থেকেই প্লাস্টিক শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে। ২০১৬ সালের জাতীয় শিল্প নীতিতেও প্লাস্টিক শিল্পকে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতের তালিকায় শীর্ষস্থানে রাখা হয়েছে।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমাদের সরকার’ উদীয়মান শিল্পখাত হিসেবে পরিবেশবান্ধব সবুজ প্লাস্টিক শিল্পখাত বিকাশে বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখানের ধলেশ্বরী ব্রিজের পশ্চিম পাশে বড়বর্ত্তা মৌজায় ৫০ একর জমির ওপর একটি প্লাস্টিক শিল্প নগরি গড়ে তোলা হচ্ছে। ১৩৩ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এ শিল্পনগরির ৩৭০টি প্লটে কম-বেশি ৩৬০টি প্লাস্টিক শিল্প ইউনিট স্থাপন করা হবে।
তিনি জানান, এসব শিল্প ইউনিটে ১৮০০ নারীসহ মোট ১৮,০০০ লোকের কর্মসংস্থান হবে। এটি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বিসিককে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলেও মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
আমু বলেন, পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন বতৃমান সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। পরিবেশের ক্ষতি করে কোনো ধরনের শিল্পায়নের প্রতি ‘আমাদের সমর্থন নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না’। যেসব প্লাস্টিক কারখনায় পরিবেশ দূষণকারী বর্জ্য উৎপাদিত হয়, সেগুলোতে বাধ্যতামূলকভাবে বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) স্থাপন করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার কোনো ধরনের ছাড় দেবে না।
বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানায় দ্রুত ইটিপি স্থাপনের জন্যও তিনি উদ্যোক্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বিপিজিএমইএর চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমান ও চ্যান চাও ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেডের নির্র্বাহি পরিচালক (ওভারসিজ) মিজ. জুডি ওয়াং।
পিডিএসও/রিহাব