নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

দিনের পর দিন দাম বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের। চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজের পর এবার নতুন করে ঝাঁজ বাড়ছে আদা ও রসুনের। সপ্তাহ ব্যবধানে প্রয়োজনীয় এ পণ্য দুটির ২০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এছাড়া একই অবস্থা সবজির বাজারে। ভরা মৌসুমেও সবজির দাম কমছেই না; উল্টো কয়েকটিতে বাড়িয়েছে অস্বস্তি।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও রামপুরা বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে নতুন করে বেড়েছে আদা ও রসুনের দাম। অবশ্যই দাম বাড়ার পেছনে চীনের করোনাভাইরাসকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর বাজারগুলোতে দেখা যায়, বাজারে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকায়। আর বাজারে আদা বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। তারপরও বাজারে দেশি রসুনের চাহিদা বেশি তাই একটু দামও বেশি চীনা রসুনের থেকে। কিছু কিছু জায়গায় রসুন ১৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়। আমদানি করা ছোট সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আর তুরস্ক ও মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।

আর পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাইকারি বাজারে কয়েক দিনের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়েছে কেজি প্রায় ৬০ টাকা। আর আদার দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। চীনের ভাইরাস আরো স্থায়ী হলে এই দাম আরো বাড়তে পারে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা।

শ্যামবাজারের ব্যবসায়ী রসুন আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম জানান, কিছুদিনের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়েছে ৬০ টাকা। যে রসুন আমরা ১২০ টাকা বিক্রি করেছি তা এখন ১৮০ টাকায় বিক্রি করছি। আর যে রসুন আমরা এর আগে ১১০ থেকে ১১২ টাকায় বিক্রি করেছি তা এখন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের আদা ও রসুনের দাম অনেকটা চীনের ওপর নির্ভর করে। দেশের বেশির ভাগ আদা-রসুন আমদানি হয় চীন থেকে। চীনের করোনাভাইরাসের কারণে কোনো পণ্য আসছে না। এ কারণেই আদা-রসুনের দাম বেড়েছে। এই ভাইরাস আরো দীর্ঘায়িত হলে আদা-রসুনের বাজার আরো বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

এদিকে কিছুদিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার। এক মাসের ব্যবধানে চিকন চালের দাম বেড়েছে প্রায় ১০ থেকে ১২ টাকা। ভালো মানের চিকন চাল কিনতে গেলে গুনতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। যে মিনিকেট চাল এর আগে বিক্রি হয়েছে ৪২ থেকে ৪৩ টাকা। তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকার কাছাকাছি। এছাড়া বাজারে আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৮০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন বোরো ধান না উঠা পর্যন্ত এই দাম আর কমার সম্ভাবনা নেই।

এছাড়া নতুন বছরে বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। প্রতি লিটার বোতল সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। আর পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। আর দাম বেড়ে মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৭০ থেকে ১৩০ টাকায়। এছাড়া খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি।

বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মতো করলার কেজি বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। শশা বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৫০, পেপে ৩০ থেকে ৫০, টমেটো ৪০ থেকে ৬০, শিম ৪০ থেকে ৫০ কেজি, ফুলকপি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। গাজর বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০, মুলা ২০ থেকে ২৫, নতুন গোল আলু ২৫ থেকে ৩০, শালগম ৩০ থেকে ৪০, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ কেজি, মাঝারি আকারের লাউ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা পিস।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ৫০০ টাকা। তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংরা ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, নলা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আর ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। পাকিস্তানি কক মুরগির বিক্রি হয়েছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা প্রতি কেজি। গরুর মাংস ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাজারদর,নিত্যপণ্যের বাজার,কাঁচাবাজার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close