নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ অক্টোবর, ২০১৯

নিত্যপণ্যের বাজার হঠাৎ অস্থির

বেশকিছু দিন থেকে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, ডিম, ডাল ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েই চলেছে। ৫০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো শীতকালীন শাকসবজির। দীর্ঘদিন ২০ টাকা কেজি দরের আলু গতকাল বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা কেজিতে। বাজারে ইলিশের সরবরাহ না থাকায় অন্য মাছের দামও বেশ চড়া। বাজারে হিমশিম খাচ্ছেন ভোক্তারা। ফের বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার ও রামপুরা কাঁচাবাজার ঘুরে এবং ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একটু ভালোমানের বড় আকারের দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া একমাস ধরে দেশি রসুন প্রতি কেজি মানভেদে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মানভেদে প্রতি কেজি আদা ১৭০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বাজারে ডিমের দামও বেশ চড়া।

বাজারে প্রতি হালি ফার্মের মুরগির ডিম ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একমাস ধরে প্রতি সপ্তাহে একটু একটু করে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বাজারে একমাস ধরে দেশি মসুরের ডাল ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর নেপালি মসুরের ডাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. ইসমাইল অভিযোগ করে বলেন, যে কটি নিত্যপণ্যের প্রয়োজন, সবগুলোর দাম বেশ চড়া। তিনি বলেন, বাজারে সবকিছুই চাহিদার তুলনায় বেশি আছে, কিন্তু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

রামপুরা বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা শেখ তন্ময় বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম অনেক বেশি। ডিম কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। একই বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা শায়লা বেগম বলেন, সরবরাহ সত্ত্বেও পেঁয়াজের দাম কমছে না। এখানে ব্যবসায়ীদের কারসাজি রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজরদারির দাবি তার।

রাজধানীর কারওয়ানবাজারের মুদি দোকানদার মোহাম্মদ আলী বলেন, একমাস ধরে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, ডিম ও ডাল বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে তারা বাধ্য হচ্ছেন।

এদিকে বাজারে দীর্ঘদিন স্থিতিশীল থাকা আলুর দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫ টাকা। গতকাল গোল আলুর কেজি বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা। আলুর দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী জহির বলেন, আলুর স্টক (মজুদ) শেষ হয়ে আসছে। ফলে কমছে সরবরাহ। এ কারণে আলুর দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে শিগগিই বাজারে নতুন আলু আসবে। আর তখন আবারও দাম কমবে।

এছাড়া ছোট শিম ১১০ থেকে ১২০ টাকা ও একটু বড় আকারের শিম ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও মুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একইসঙ্গে কয়েক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো ও গাজরের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

পাকা টমেটো আগের সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, গাজর বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে লাউ, করলা, ঝিঙে, বরবটি, বেগুন, পটোল, ঢ্যাঁড়স, উচ্ছে, মিষ্টিকুমড়া, ধুন্দলসহ সব ধরনের সবজি। গত সপ্তাহের মতো ছোট আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। করলা, বরবটি, বেগুন, চিচিংগা, ঝিঙা, ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। এসব সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, পাঙ্গাস ১৬০, চাষের রুই ৪০০, পাবদা ৬৫০ থেকে ৭৫০, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০, শিং ৪০০ থেকে ৫৫০, বোয়াল ৫০০ থেকে ৭০০, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং চিতল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নিত্যপণ্যের বাজার,বাজারদর,কাঁচাবাজার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close