দেশের ছয় স্থলবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের পথে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে পাল্টে যাবে দৃশ্যপট। জমি অধিগ্রহণ, ইয়ার্ড, ওজন সেতু, গুদাম, কার্যালয়সহ অবকাঠামো উন্নয়নকাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পগুলো শেষ করা হবে বলে মনে করছেন স্থলবন্দর-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে সড়কপথে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য বিলোনিয়া, ধানুয়া-কামালপুর, বাল্লা, গোবড়াকুল-কড়ইতলি এবং শেওলা, রামগড়, ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (উন্নয়ন) হাবিবুর রহমান বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। নানা জটিলতায় জমি অধিগ্রহণ শেষ না হওয়ায় অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে আগামী দু-এক বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে তোড়জোড় চলছে।

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য এসব স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের বিকল্প নেই বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। তার মতে, এসব স্থলবন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা গেলে একদিকে ওই অঞ্চলে কর্মসংস্থান হতো, অন্যদিকে দুদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমত।

২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে ফেনীর পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দর উন্নয়নে ৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পটির জমি অধিগ্রহণের পাশাপাশি ইয়ার্ড, ড্রেন, বিদ্যুৎ-সংযোগ, ওজন সেতু, কার্যালয়— এসব নির্মাণ করার কথা। এখন চলছে জমি অধিগ্রহণের কাজ। আগামী জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার কথা।

২০১৮ সালের জুলাই মাসে জামালপুরের বকশীগঞ্জের এই স্থলবন্দরের উন্নয়নে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। প্রায় ৬০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে গত এক বছরে মাত্র দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আগামী জুন মাসে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা। এ সময়ের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ, ইয়ার্ড, ড্রেন, বিদ্যুৎসংযোগ, ওজন সেতু, কার্যালয় নির্মাণ করতে হবে।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা স্থলবন্দরটির উন্নয়নের জন্য ২০১৭ সালের জুলাই মাসে তিন বছরমেয়াদি ৪৯ কোটি টাকার প্রকল্প চলমান আছে। গত দুই বছরে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। এ প্রকল্প আগামী জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের গোবড়াকুল-কড়ইতলি স্থলবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পটিও এগিয়ে চলছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে।

স্থলবন্দরের এই তিনটি অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের জন্য ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ৬৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত। গত জুলাই মাস পর্যন্ত সাড়ে ৩১ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বাস্তবায়নের হার মাত্র ৪০ শতাংশ। এই তিনটি স্থলবন্দরেরও জমি অধিগ্রহণ চলছে। অবশ্য প্রকল্পটির জন্য এরই মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শেওলা স্থলবন্দরের উন্নয়নের জন্য ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

পিডিএসও/তাজ