নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৮ মার্চ, ২০১৯

অবশেষে উত্তরায় যাচ্ছে বিজিএমইএ ভবন

অবশেষে রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে বিদায় নিচ্ছে বহুল আলোচিত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩ এপ্রিল বুধবার রাজধানীর উত্তরায় নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হচ্ছে বিজিএমইএ’র সদর দফতর।

প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, বিজিএমইএ’র উত্তরার নতুন ভবন আগামী ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার সম্মতি দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে বিদায় নিচ্ছে বহুল আলোচিত বিজিএমইএ ভবন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আগামী ৩ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় এই ভবনের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছি।’

সিদ্দিকুর রহমান জানিয়েছেন, উত্তরার নতুন ভবনের চারতলার কাজ শেষ হয়েছে। আমরা আমাদের কাজ সেখানে চালিয়ে নিতে পারব। তবে ভবনে চলাচল উপযোগী সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুই টাওয়ারসমৃদ্ধ বিজিএমইএ নতুন বহুতল ভবনটি উত্তরার ১৭ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত। নতুন ভবনটি হবে ১৩তলা বিশিষ্ট। এরই মধ্যে ভবনের বেসমেন্টসহ ভবনের চারতলা পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে।

জানা গেছে, ভবনের প্রতিটি তলার আয়তন হবে ৪০ হাজার বর্গফুট। ৪০ হাজার বর্গফুটের একটি প্রদর্শনী হলও রয়েছে নতুন এই বিজিএমইএ ভবনে। লেকসাইট ভিউয়ের সাড়ে ৫ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে নতুন এই ভবন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিলের মধ্যে বর্তমান ভবন খালি করে দেওয়া হবে এই মর্মে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে আদালতের কাছে মুচলেকা দেওয়া আছে।

রাজধানীর হাতিরঝিলে অবস্থিত বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বহুতল ভবনটি ভেঙে ফেলার রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য বিজিএমইএ যে আবেদন করেছিল সেই আবেদন ২০১৭ সালের ৫ মার্চ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। আদালতে বিজিএমইএ-এর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর এমিকাস কিউরি আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বিজিএমইএ’র ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়ে রায় দেন। রায়ে বিজিএমইএকে নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি ভাঙতে বলা হয়। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল, সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই বছরের ৫ এপ্রিল বিজিএমইএ’র আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন।

পরে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরো বাড়ান। এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপির পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। যেটা ২০১৬ সালের ২ জুন খারিজ হয়ে যায়। এরপর বিজিএমইএ আবার রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে (রিভিউ) আবেদন করেন। তাও শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ২ জুন সেই সময়কার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ খারিজ করে দেন।

১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভবন নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বিজিএমইএ ভবন,বিজিএমইএ,হাতিরঝিল,ভবন স্থানান্তর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close