নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৩ নভেম্বর, ২০১৮

দাম কমেছে শীতের সবজির

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বাজারে ইলিশ

রাজধানীতে কয়েক সপ্তাহ ধরে শীতকালীন শাকসবজি আসতে শুরু করেছে। শুরুর দিকে দাম কিছুটা বাড়তি হলেও এখন সবজির সরবরাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দামও কমতে শুরু করেছে। মানভেদে ১৫-৬০ টাকা পর্যন্ত কমেছে শীতকালীন সবজির। বিক্রেতারা বলছেন, শীত যত বাড়বে সরবরাহও বাড়বে আর দামও তত কমবে। অন্যদিকে, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে রাজধানীর বাজারগুলোতে ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে অন্য মাছের। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ডাল, তেল ও মসলার দাম।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুরুর দিকে শীতের অন্যতম সবজি বাঁধাকপি ও ফুলকপি প্রতিটি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও কারওয়ান বাজারে ভালো মানের এই কপি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। আবার কিছুটা ছোট কপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। প্রতিটি কপি ২০ টাকা করে হাঁকাচ্ছিলেন কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা মো. রবি। তিনি বলেন, ‘দাম কইম্যা গেছে অনেক। একদম সস্তা।’

এই বিক্রেতার কথার প্রমাণ পাওয়া গেল অন্য সবজির দাম শুনে। তার দোকানের পাশেই একটি দোকানে শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও দাম ছিল ১২০ টাকা। গাজর ছিল ১০০ থেকে ১২০ এখন ৮০ টাকা কেজি। করলা ছিল ৫০ টাকা। এখন পাওয়া যাচ্ছে ৪০ টাকায়। মুলা ছিল ৪০ টাকা কেজি। গতকাল ১৫-২০ টাকা কেজি দরে মুলা বিক্রি হয়েছে। বাজারে নতুন আলু ছিল প্রতি কেজি ১০০ টাকা। গতকাল তা ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া টমেটো ৮০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেজে ৫০ টাকা, ঝিঙা ৪০ টাকা, কাকরোল ৩৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

শীতের শাকের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে পালংশাক, সরিষাশাক, মুলাশাক, লাউশাক প্রভৃতি। গত সপ্তাহে এসব শাক আঁটিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা থাকলেও এখন তা ১০ থেকে ১৫ টাকায় পাওয়া গেছে।

হাতিরপুল এলাকার বাসিন্দা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে মোস্তাফিজ আহমেদ বলেন, শীতের সবজির দাম কিছুটা কমেছে, এটা স্বস্তিদায়ক। এই সময়ে তিনি প্রতিদিন কোনো না কোনো সবজি খান বলে জানালেন।

সবজির বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে এখন সবচেয়ে বেশি চাহিদা হচ্ছে শীতের শাক-সবজির। এ জন্য তারা বেশি বেশি করে এসব শাকসবজি দোকানে রাখছেন।

এদিকে, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সরবরাহ বাড়ায় আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে ইলিশের দাম। প্রতি ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জোড়া ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা, ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের হালি ১০০০ থেকে ১১৫০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতিজোড়া ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এ ছাড়া বাজারে প্রতি কেজি ট্যাংরা মাছ ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, কৈ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, রুই ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহ ব্যবধানে এসব মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

এ বিষয়ে মালিবাগ মাছ বাজারের বিক্রেতা হাবিব বলেন, এখন বাজারে ইলিশ মাছের দাম কম। এ ছাড়া এখন খাল-বিল ও নদীতে মাছ ধরা পড়ায় আগের তুলনায় মাছের দাম কিছুটা কমেছে।

অন্যদিকে, সপ্তাহ ব্যবধানে কমেছে ডিমের দামও। প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হয়েছে ১০৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা। ২০ টাকা কমে প্রতি ডজন হাঁসের ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়।

এসব বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, লেয়ার ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা, গরুর মাংস ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৭৮০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায়। তবে, অপরিবর্তিত রয়েছে ডাল, তেল ও মসলার দাম। মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি (সিরাজ) চাল ৬০ টাকা, আটাশ চাল ৫০ টাকা, উনত্রিশ চাল ৪৫ টাকা, নাজির ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এ ছাড়া প্রতিকেজি মসুর ডাল (দেশি) ১০০ টাকা, মোটা ৭০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, ভোজ্যতেল প্রতি লিটার (খোলা) ৯০ টাকা, বোতল ১০৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর প্রতিকেজি আদা ১৭০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, রসুন প্রতিকেজি (ইন্ডিয়ান) ৭০ টাকা, দেশি ৬০ টাকা, পেঁয়াজ (দেশি) ৪০ টাকা, পেঁয়াজ (ইন্ডিয়ান) ৩০ টাকা।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শাকসবজি,শীতের সবজি,বাজারদর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close