শাহ্জাহান সাজু

  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসছে ইলেকট্রনিক হিসাবযন্ত্র

জানুয়ারি থেকে ১০ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিশেষায়িত হিসাবযন্ত্র (ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস বা ইএফডি) স্থাপন করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ১৩ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়ের হিসাবে স্বচ্ছতা আনা ও তাদের কাছ থেকে কাক্সিক্ষত মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আদায় করতে সরকার এ উদ্যোগ নিচ্ছে। ২০০৮ সালে চিহ্নিত হওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, দেশব্যাপী খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিশেষায়িত হিসাবযন্ত্র স্থাপনের বাধ্যবাধ্যকতা দিয়ে সরকার সম্প্রতি একটি আদেশ জারি করেছে। এক একটি ইএফডির দাম পড়তে পারে ২৫-৩০ হাজার টাকা। ১০ হাজার ইএফডির জন্য সরকার উল্লিখিত অর্থ ব্যয় করলেও এনবিআর আশা করছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাবে স্বচ্ছতা এলে এটি সরকারের জন্য বড় ধরনের ইতিবাচক ফল দেবে।

জানা যায়, ২০০৮ সালে এনবিআরের মাঠপর্যায়ের অফিসগুলো জরিপ করে সাড়ে আট হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করেছিল, যারা ইসিআর (ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার) মেশিন ব্যবহারের যোগ্য। পরে এসব প্রতিষ্ঠানকে ইসিআর ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা দেওয়া হলেও কার্যত কোনো ফল আসেনি। এজন্য ওই সব প্রতিষ্ঠানকে ইএফডি ব্যবহার নিশ্চিত করতে শুরুতে তাদের বিনামূল্যে ইএফডি মেশিন দেওয়া হবে। এর পর থেকে যারা স্থাপন করবে, তারা কিনে নিতে হবে।

জানা যায়, ঢাকাসহ সিটি করপোরেশন ও দেশব্যাপী জেলা শহরের ১৩ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে গত ৯ আগস্ট এনবিআর একটি আদেশ জারি করেছে। ফলে কয়েক লাখ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করতে হবে। ১৩ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলো আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ ও ফাস্টফুডের দোকান, মিষ্টান্নভান্ডার, আসবাবপত্রের বিক্রয়কেন্দ্র, পোশাক বিক্রয়কেন্দ্র বা বুটিক শপ, বিউটি পার্লার, ইলেকট্রনিক বা ইলেকট্রিক্যাল গৃহস্থালিসামগ্রীর বিক্রয়কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার, অভিজাত শপিং সেন্টারের অন্তর্ভুক্ত সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, জেনারেল স্টোর বা সুপারশপ, অন্যান্য বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ী (পাইকারি ও খুচরা) প্রতিষ্ঠান এবং স্বর্ণকার, রৌপ্যকার ও স্বর্ণ ও রৌপ্যের দোকানদার ও পাইকারী। এটি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার না করলে বা ব্যবহারে কোনো ধরনের ফাঁকি প্রমাণিত হলে ২০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে।

জানা যায়, এই মেশিনের মূল বৈশিষ্ট্য হলোÑ এটি এনবিআর সংশ্লিষ্ট বিভাগের সার্ভারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবে। এর নাম ইএফডি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা ইএফডিএমএস। যেকোনো বিক্রির তথ্য ইএফডিতে দেওয়া হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা এনবিআরে রক্ষিত সার্ভারে দেখা যাবে। এটি ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে অনলাইন বা ইন্টারনেট ব্যবস্থা ও নির্ধারিত সিম থাকবে। প্রত্যেক বিক্রয় তথ্য অনুমোদিত কোডের জন্য এনবিআরে রক্ষিত সার্ভার বা ইএফডিএমএসে যাবে। তাৎক্ষণিক ইএফডিএমএস থেকে অনুমোদিত কোড পাওয়ার পর বিক্রয়ের লেনদেন কার্যকর হবে। একটি ইউনিক নাম্বারসহ চালান মুদ্রিত হবে। ওই চালানের কপি ক্রেতাকে দেওয়া হবে এবং ওই নম্বর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও এনবিআরের সংরক্ষিত সার্ভারে থাকবে। ফলে প্রতিদিন কত বিক্রি হয়েছে এবং এর কত ভ্যাট আদায় হলো, তা এনবিআর জানতে পারবে।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,ইলেকট্রনিক হিসাবযন্ত্র
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close