জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীন মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) বকেয়া রাজস্ব আদায়ের জন্য নতুন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসাবে যেসব প্রতিষ্ঠানের নিকট ভ্যাট পাওনা রয়েছে, তাদের রাজস্ব পরিশোধের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে এলটিইউর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এনবিআরের নির্দেশনা মোতাবেক বকেয়া ভ্যাট আদায়ে আমরা নতুন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি। বকেয়া ভ্যাট নিয়ে যেসব মামলা রয়েছে সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আইনি পদক্ষেপ আরো জোরালো করা হবে। এছাড়া এলটিইউ আওতাভুক্ত ভ্যাট বকেয়া থাকা প্রতিষ্ঠানকে রাজস্ব পরিশোধের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের নিকট ভ্যাট পাওনা রয়েছে তাদের প্রাথমিকভাবে চিঠি দিয়ে রাজস্ব পরিশোধের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। তবে এতে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া না গেলে পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জানা যায়, বর্তমানে গ্যাস কোম্পানি, বেসরকারি মোবাইল অপারেটর, ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে এলটিইউর ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ভ্যাট বকেয়া রয়েছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের কাছে থেকে ভ্যাট আদায় করে সরকারের কোষাগারে জমা দেন না এমন অভিযোগও রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছে এনবিআর।

এদিকে, বড় করদাতা প্রতিষ্ঠান পণ্য ও সেবার বিপরীতে যে মূল্য ঘোষণা করবে তা যাচাই-বাছাই করে দেখবে এলটিইউ কর্মকর্তরা। এতদিন এলটিইউর আওতাভুক্ত বড় করদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্য ও সেবার বিপরীতে যে মূল্য ঘোষণা করত সেটা প্রায় সব ক্ষেত্রে মেনে নিতেন ভ্যাট কর্মকর্তারা।

তবে এখন থেকে মূল্য ঘোষণা যাচাই-বাছাইয়ের সময় এলটিইউ কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় হবে না বলে জানান এলটিইউর একাধিক কর্মকর্তা। এ ধরনের উদ্যোগের ফলে এলটিইউর ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রসঙ্গত, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এনবিআরের ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্য ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এলটিইউকে ৬০ হাজার ৬১৭ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করতে হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

পিডিএসও/তাজ