বগুড়া প্রতিনিধি
কৃষি প্রযুক্তির নতুন সংযোজন
বর্ষায় ধান শুকানোর মেশিন
দেশের অগ্রসরমান কৃষি প্রযুক্তিতে সংযোজিত হয়েছে ড্রায়ার মেশিন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত এ মেশিনের সাহায্যে কৃষকরা একটানা বর্ষাতেও ঘরে বসেই ধান শুকাতে পারবেন। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের জন্য আর অপেক্ষা করতে হবে না।
প্রযুক্তিটি পরিবেশবান্ধব, শুকানো ধানে-চালের গুণগত মান সঠিক থাকে। শুধু তাই নয়, চাল তৈরি করার জন্য সিদ্ধ ধানের পাশাপাশি চাষিরা বীজ ধানও শুকাতে পারবেন। ধান বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা ৯০ শতাংশ। মেশিনটি চালাতে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, তবে ডিজেল দিয়েও চালানো সম্ভব।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের পোস্ট হারভেস্ট লস রিডাকশন ইনোভেশন ল্যাবে ড্রায়ার মেশিন তৈরি করা হয়। বগুড়ার শাজাহানপুরের চোপীনগর গ্রামে এর একটি পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ড্রায়ার পরিচালনা এবং ধান সংরক্ষণে বায়ুরোধী ব্যাগের ব্যবহার-সংক্রান্ত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ৫০ জন কিষান-কিষানি অংশ নেন। প্রকল্পের ইন-কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. মো. মঞ্জুরুল আলমের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ সেশন পরিচালনা করেন শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আ জ ম আহসান শহীদ সরকার, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসাইন, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা। তাদের সহায়তা করেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাগণ বলেন, ড্রায়ার মেশিনের সাহায্যে প্রতিমণ ধান শুকাতে ৩০-৩২ টাকা খরচ হবে। বড় কোনো উঠান বা আঙিনার প্রয়োজন হবে না। বসতবাড়ির বারান্দার এক কোণে এ ড্রায়ার স্থাপন করে অনায়াসে ধান শুকানো যায়। মেঘলা দিন কিংবা একটানা বৃষ্টিতেও ধান শুকাতে কোনো সমস্যা হবে না। যন্ত্রটি অপারেট করা অত্যন্ত সহজ। ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা দামের ড্রায়ারে ৪-৫ ঘণ্টা সময়ে একবারে ৫০০ কেজি ধান শুকানো যায়। এক দিনে ড্রায়ারের সাহায্যে তিন বার ধান শুকানো যাবে।
মেশিনটি বাজারজাতকরণের জন্য ইতোমধ্যেই বগুড়ার ছিলিমপুরস্থ মেসার্স কামাল মেশিন টুল্স, দিনাজপুর জেলার কালিতলাস্থ মেসার্স উত্তরণ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস্ এবং নেত্রকোনা জেলার শ্যামগঞ্জ বাজার এলাকার ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ কাজ শুরু করেছে।
পিডিএসও/তাজ