নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের ৯০ শতাংশ ব্যাংকে পুরোপুরি আইটি গভর্ন্যান্স নেই
দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ ব্যাংকে পুরোপুরি আইটি গভর্নেন্স নেই। তার মধ্যে ৮ শতাংশ ব্যাংকে আইটি গভর্নেন্স বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ৬০ শতাংশ ব্যাংকে আইটি গভর্নেন্স বাস্তবায়নের কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি। আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে ২২ শতাংশ ব্যাংকে।
ফলে আইটি অবকাঠামো, নিরাপত্তাসহ অনেক বিষয়ে পিছিয়ে পড়ছে ব্যাংকগুলো। এ অবস্থা উত্তরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইসিসি গাইড লাইন অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) অডিটরিয়ামে ‘আইটি অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক কর্মশালায় উপস্থাপিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহাঃ রাজী হাসান। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক শিহাব উদ্দিন খান। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী।
বিআইবিএমের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময়ে সাইবার নিরাপত্তাসংক্রান্ত প্রশিক্ষণের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ব্যাংকের কর্মীদের ব্যাপক হারে সাইবার নিরাপত্তা এবং সফটওয়্যার প্রশিক্ষণ বেড়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, সারা বিশ্বেই সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তবে ব্যাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত এতে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকটি বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। এরই মধ্যে আইসিসি গাইড লাইন দিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। যেটি বাস্তবায়নের দিকটি তদারকি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তিনি আরো বলেন, দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো মানের সফটওয়্যার তৈরি করছে। এগুলো ব্যাংক ব্যবহারে উদ্যোগ নিতে পারে। এরই মধ্যে দেশের ব্যাংকগুলোর একটি বড় অংশ দেশীয় সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু করেছে। বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে খরচের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনায় অনেক ঝামেলা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর নাজনিন সুলতানা বলেন, যোগযোগের অভাবে এক ব্যাংকের সমস্যা অন্যরা জানতে পারছে না। এতে একই দুর্ঘটনা অন্য ব্যাংকেও ঘটছে। নিজেদের মধ্যে সমস্যাগুলো আলোচনা করলে এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়াও আইটি নিরাপত্তায় অভিজ্ঞ জনশক্তি তৈরি অত্যন্ত জরুরি। এখন ব্যাংকের সব কর্মকর্তা এবং গ্রাহক পর্যায়েও সচেতনতা সৃষ্টির সময় এসেছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম ফজলুল হক বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার প্রকৌশলী তৈরি হয়েছে। তাদের একটু প্রশিক্ষণ দিলেই দেশের কাজে লাগানো সম্ভব। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রতিটি ব্যাংকের আইটি বিভাগকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।
পিডিএসও/তাজ