নিজস্ব প্রতিবেদক
তারল্য সংকট
চট্টগ্রাম বন্দরের তহবিল পেতে ব্যাংকগুলো মরিয়া
তারল্য সংকটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে তহবিল সংগ্রহে ব্যাংকগুলো মরিয়া হয়ে উঠেছে। ব্যাংকগুলো অর্থ সংকট উত্তরণে বন্দরকে উচ্চহারে মুনাফা প্রদানেও দ্বিধা করছে না। কয়েকটি ব্যাংক শতকরা ১১ ভাগ পর্যন্ত মুনাফা দিতে বন্দরকে প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংকে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের এ সকল টাকা প্রায় ৪০টি ব্যাংকে রয়েছে। দেশের অন্য ব্যাংকসমূহও বন্দরের তহবিল পেতে প্রতিনিয়ত লবিং-তদ্বির চালিয়ে যাচ্ছে বলে বন্দর সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর তহবিলে তাদের নিজস্ব খরচ বাদে ১০০ কোটি টাকা জমা হলে তা বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রাখা হয়। বন্দরের এই তহবিল পেতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
বন্দর তার তহবিল এক বছরের জন্য ব্যাংকে জমা রাখে। সাধারণত ব্যাংকে জমা রাখা টাকা বছর শেষে পুনরায় ওই ব্যাংকেই বিনিয়োগ করে থাকে। তাছাড়া বন্দর ওই সকল ব্যাংকে নতুন আরো অর্থও বিনিয়োগ করে থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বন্দর ৪/৫টি ব্যাংকে নতুন বিনিয়োগ বন্ধ রেখেছে। বন্দরের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, পত্র-পত্রিকায় ওই সকল ব্যাংকের ব্যাপারে নেতিবাচক প্রচারণার কারণে বন্দর নতুন বিনিয়োগ থেকে সরে এসেছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের তহবিল জমা রাখা বাবদ প্রতিবছর ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা মুনাফা পেয়ে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো বন্দরের তহবিল পেতে মুনাফা বাড়িয়ে দেওয়ায় বন্দরের মুনাফার পরিমাণও অনেক বেড়েছে। তিন মাস পূর্বে যেখানে ব্যাংকের মুনাফা রেট ৭ থেকে সাড়ে ৭ ভাগ ছিল। তা বর্তমানে ১০ থেকে সাড়ে ১০ ভাগে উন্নীত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, এ মাসেই ব্যাংকগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কত মুনাফায় তা দেওয়া হবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। ব্যাংকের রেটিং এবং মুনাফার ওপর ভিত্তি করে বেসরকারি ব্যাংকসমূহে তহবিল দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিজস্ব নীতিমালা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তা পালন করা হয় না। নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি ব্যাংকের শুধুমাত্র একটি শাখায় টাকা রাখা যাবে। আবার সেই শাখাটি হতে হবে আগ্রাবাদ এলাকায়। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হলো কয়েকটি ব্যাংকের ৪/৫টি শাখায় বন্দরের টাকা জমা রাখা হয়েছে। এমনকি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১৫/২০ কিলোমিটার দূরে অনেকটা নির্জন এলাকার ব্যাংক শাখায়ও বন্দরের টাকা জমা রাখা হয়েছে।
বন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, উচ্চ মহলের তদ্বির এবং বন্দরের শীর্ষ ব্যক্তিদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর কোন ব্যাংক কতো টাকা পাবে তা নির্ভর করে। একই সাথে কয়টি শাখায় টাকা জমা রাখা হবে তাও নির্ধারণ হয়ে থাকে ।
পিডিএসও/তাজ