ডিএসইতে দেড় বছরে সর্বনিম্ন লেনদেন
পুরো সপ্তাহ নেতিবাচক প্রবণতার মধ্য দিয়ে পার করেছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম দিন থেকে শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত সূচকের টানা পতনে ছিল বাজার। সঙ্গে কমেছে লেনদেনও।
চারদিনে প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে প্রায় দেড়শ পয়েন্ট। আর লেনদেন কমেছে ২২৩ কোটি টাকার মতো। বৃহস্পতিবার লেনদেন এসে ঠেকেছে ২৮৯ কোটি টাকায়। ডিএসইতে যা গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন। এর আগে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই ডিএসইতে ২৭২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৩১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৩টির, কমেছে ১৬১টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৭টি কোম্পানির শেয়ার দর।
ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৯০৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ১৭০ পয়েন্টে।
অন্যদিকে আজ চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংকে তারল্য সংকট ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আমানত ও ঋণসীমা সমন্বয় নিয়ে সিদ্ধান্ত বাজারকে এ ধারায় টেনে আনছে।
তিনি বলেন, আমরা যখন ২০১০ সালের ধসটা দেখি, তখনও বলা হয়েছিল- ব্যাংকগুলো ক্যাপিটাল মার্কেটে তাদের এক্সপোজার লিমিট ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এভাবে কড়াভাবে না গিয়ে আস্তে আস্তে পদক্ষেপ নিতো, তবে ওই সময় এতো বড় ধস হতো না।
এই গবেষক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সবশেষ যে সিদ্ধান্ত নিলো- নির্বাচনী বছরে তা সাধারণত হয় না। এগুলো জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত না। এগুলোর ফলে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। হঠাৎ এ ধরণের সিদ্ধান্ত কাম্য নয়।
তিনি বলেন, এডিআর কমানোর পর ব্যাংকগুলো অলরেডি ২-৩ শতাংশ সুদহার বাড়িয়ে দিয়েছে। যেগুলো এক অঙ্কে নেমে গিয়েছিল, তা বাড়িয়ে দুই অঙ্কে আনা হয়েছে। হয়তো এটি আরো বাড়বে।
ওয়াজিদ হাসান বলেন, যে টাকা মানুষ সঞ্চয়পত্র কিনে বা ব্যাংকে রাখতে পারে, সেটা মানুষ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে থাকে। কিন্তু ব্যাংকগুলো যখন উচ্চ সুদহার অফার করছে, আমানতে সুদহার বাড়াচ্ছে, তখন মানুষ ব্যাংকেই নিরাপদ মনে করছে।
‘তারা দেখছে পুঁজিবাজারে তো ঝুঁকি রয়েছে, এখানে বিনিয়োগের দরকার নেই। এতে পুঁজিবাজারে যে আস্থা ফিরেছিল তা হারিয়ে যাচ্ছে।’
পুঁজিবাজারে এই হঠাৎ পতনের পেছনে তারল্য সংকটই বড় কারণ বলে মনে করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, লিক্যুইডিটি (তারল্য) সংকট যখন হয়, তখন স্বাভাবিকভাবে শেয়ারবাজারে লিক্যুইডিটি কমবে।
পিডিএসও/রিহাব