শাহ্জাহান সাজু

  ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

অতিরিক্ত ভার বহনে সড়ক সেতু ঝুঁকিতে

অতিরিক্ত ভার বহনে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের সড়ক ও সেতুগুলো। অতি লোভের কারণে চালক-শ্রমিকরা ওজনসীমার অতিরিক্ত মালামাল পরিবহন করছেন। ফলে সড়ক ও সেতুর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এক্সেল লোডসংক্রান্ত সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতি ও বিধিমালা থাকলেও তা কেউ মানছে না। তবে অতিরিক্ত ভার বহন ঠেকাতে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করেছে সরকার। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্যের এই কমিটি মহাসড়কে অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে স্বল্প সময়ের মধ্যে সুপারিশমালা প্রণয়ন করবেন।

সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের ৪১তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই সভায় সেতুমন্ত্রী বলেন, এক্সেল লোড সংক্রান্ত সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতি ও বিধিমালা রয়েছে। কিন্তু এর প্রয়োগ নেই খুব একটা। আর ওভারলোডের কারণে সড়কের ও সেতুর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, সরকার অনেক অর্থ ব্যয় করে নবীনগর-চন্দ্রা, ঢাকা-চট্টগ্রাম ইত্যাদি চার লেনের সড়ক মাত্র কয়েক দিন আগে তৈরি করেছে। কিন্তু যানবাহনের ওভারলোডের কারণে নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যগুলোও ক্ষতির মুখে। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনের সড়কে দ্বিতীয় কাঁচপুর, মেঘনা, মেঘনা গোমতি সেতু জাইকার অর্থায়নে নির্মাণাধীন রয়েছে। বর্তমানে ওই সড়কে যে সেতুগুলো রয়েছে, ওভারলোডের কারণে সেগুলো যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দেশের ‘অর্থনীতির লাইফ-লাইন’ হুমকির মুখে পড়বে। তাই ওই সেতুগুলোতে ওভারলোড যানবাহন না চালানোর জন্য মোটরযানের মালিক শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানান সেতুমন্ত্রী। সভায় নীতিমালা অনুযায়ী যানবাহনে মালামাল পরিবহনের তাগিদও দেন তিনি।

সভায় জানানো হয়, বিআরটিএর প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী দুই এক্সেল গাড়ির মালামাল পরিবহন ক্ষমতা ১৫ দশমিক ৫ মেট্রিক টন। যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তবে এই বিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে মালামাল পরিবহন করতে হলে আইন সংশোধন করতে হবে।

সভায় নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, উৎস মূলে মালামাল পরিবহনের ওজনসীমা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিশেষ করে বন্দর এবং এজেন্ট পর্যায়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, মালিকরা মাঠে থাকেন না। মাঠে থাকেন চালক-শ্রমিক। অতি লোভের কারণে তারা ওজনসীমার অতিরিক্ত মালামাল পরিবহন করেন। বিষয়টি মাঠ পর্যায়ে যারা দায়িত্বে রয়েছেন—যেমন পুলিশ প্রশাসন, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরিবহন এজেন্ট পর্যায়ে কার্যকর মনিটরিং করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সভায় বলেন, বিআরটিএ যানবাহনে মালামাল পরিবহনের জন্য সর্বোচ্চ যে ওজনসীমা নির্ধারণ করেছে, তা আন্তর্জাতিক মান, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওজনসীমার নিয়মনীতি অনুসরণ করে নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই এটি কোনোক্রমেই পরিবর্তন করা যাবে না। এই ওজনসীমার বাইরে মালামাল পরিবহন করা হলে, যে কোনো সড়কের স্থায়িত্ব খুব কম সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

জানা গেছে, সরকার ২০১২ সালের ১১ জুন মোটরযানের এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র পরিচালনাসংক্রান্ত একটি নীতিমালা অনুমোদন হয়। যা ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর রয়েছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী সড়ক বিভাগের অধিনস্থ সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতাধীন সব এক্সেল লোড কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সড়ক সেতু,ঝুঁকি,সেতু,জনপথ অধিদফতর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist