গাজী শাহনেওয়াজ

  ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

মাংসেও স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ

আজ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা

মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করছে বাংলাদেশ। এর জন্য অন্য দেশ থেকে গরু আমদানি নিরুৎসাহিত করার কথা ভাবছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। আজ এ বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে। এরআগে মাছ উৎপাদনে রেকর্ড সাফল্য লাভ করে দেশ; মাছ এখন বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, গরু আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে গত ৯ বছরের প্রচেষ্টায় মাংসের উৎপাদন ৭ গুণ বেড়েছে। ২০০৮ সালে যেখানে এই উৎপাদন ছিল ১০ লাখ মেট্রিন টন, গত অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ লাখ মেট্রিক টন। ফলে দেশের জনগণের মাংসের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে এই পণ্যটি রফতানি করার কথা চিন্তা করছে মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, কথায় বলে ‘মাছে ভাতে বাঙালি’—এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে ক্ষমতাসীন সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বর্তমানে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে মাছ রফতানি করা হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪১ লাখ ৩৪ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছে। এই সময়ে মাছের পাশাপাশি মাংসের উৎপাদন বেড়েছে। যা দেশের মানুষের চাহিদা পূরণে সক্ষম বলে সরকার মনে করছে। আগামীতে মাংস রফতানির পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। বেড়েছে দুধ ও ডিমের উৎপাদন। মাছের পর মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে দেশ এই বার্তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রোববার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেলা ১১টায়।


*বর্তমানে উৎপাদন ৭১ লাখ টন *গরু আমদানি বন্ধে তৎপর হচ্ছে সরকার


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এ প্রসঙ্গে বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি প্রর্বতন এবং তা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের মাধ্যমে গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির বহুমাত্রিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। তখনকার সরকারের মতো বর্তমান সরকারও এ বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে। যে কারণে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশি গরুর পাশাপাশি এক হাজার কেজি ওজনের আমেরিকান সংকরায়নকৃত ব্রাহমা জাতের গরু পালন হচ্ছে। ফলে আমরা মাছের পাশাপাশি মাংসেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। মন্ত্রী আরো বলেন, এত সাফল্যের পরও আইনের ফাঁক গলিয়ে আসা হিমায়িত মাংসের আমদানি বন্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতা গ্রহণকালে দেশে মাংসের উৎপাদন ছিল প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ লাখ মেট্রিক টনে। যা ৭ গুণেরও বেশি। চলতি অর্থবছরে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৭ সালের পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজারটি। কোরবানি ঈদ উপলক্ষে হৃষ্টপুষ্টকরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে অধিক উৎপাদনশীল গবাদিপশু (মূলত দেশীয় জাতের) পালনের মাধ্যমে ওই পরিমাণ গবাদিপশু জোগান দেয়া সম্ভব হয়েছে। গত বছরে গবাদিপশু পালনে সম্পৃক্ত খামারির সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ২৮৯ জন। একই সময়ে দুধের উৎপাদন তিনগুণ ও ডিমের উৎপাদন প্রায় ৮ গুণ বেড়েছে। গত অর্থবছরে দুধের উৎপাদন ছিল ২৬ লাখ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ৯৩ লাখ মেট্রিক টন এবং ডিম উৎপাদন ৫৬৫ কোটি থেকে ১ হাজার ৪৯৩ কোটিতে পৌঁছেছে। আগামীতে আরও বাড়বে বলে মন্ত্রণালয় আশাবাদী।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জনসংখ্যা ও আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দুধ, মাংস, ডিম এবং এসব পণ্য থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের চাহিদাও ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে খাদ্য পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের ভিশন-২০২১ অনুযায়ী প্রতিদিন জনপ্রতি দুধ ১৫০ মিলিলিটার ও মাংস ১১০ গ্রাম এবং বছরে ডিমের চাহিদা ১০৪টি নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রতিদিন ৯৪ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন দুধ ও ৬৯ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন মাংস এবং বছরে ১৭ কোটি ৮১ লাখ ৫০ হাজারটি ডিম উৎপাদন করা সম্ভব হবে মন্ত্রণালয় আশা করছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাণিজ্য,মাংস উৎপাদন,গরু আমদানি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist