খেলাপি ঋণ ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা : সংসদে অর্থমন্ত্রী
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে মন্দমানের শ্রেণিকৃত ঋণ ৬৫ হাজার ৮৬০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এসব খেলাপি ঋণের মধ্যে আদায়ের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১১০ কোটি টাকা। চলতি শীতাকালীন অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) প্রশ্নের জবাবে আজ বৃহস্পতিবা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এসব তথ্য জানান। অর্থমন্ত্রী আদায় অযোগ্য শব্দটি ব্যবহার না করে তার স্থলে শ্রেণিকৃত শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এছাড়া অপর এক প্রশ্নে সংসদ সদস্য খেলাপি ঋণ শব্দটি ব্যবহার করলে উত্তরে খেলাপি ঋণ শব্দটির স্থলে শ্রেণিকৃত শব্দ ব্যবহার করা হয়। তিনি জানান, মোট ঋণের ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ খেলাপী ঋণ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে মন্দঋণের পরিমাণ শতকরা ৮ দশমিক ৭৫শতাংশ। আদায়ের পরিমাণ ৩ দশকি ৮৭ শতাংশ।
সরকারি দলের মামুনুর রশীদ কিরনের (নোয়াখালী-৩) তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের আমানত ক্রমাগতভাবে কমে যাওয়ার তথ্য সঠিক নয়। বরং সার্বিকভাবে ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ বেড়েছে। নভেম্বর ২০১৬ এর তুলনায় নভেম্বর ২০১৭ শেষে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ৬টি ব্যাংকের আমানতের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এ সময় সংরক্ষিত আমানতের পরিমাণ ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে ১৭ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে।
মহিলা এমপি বেগম সানজিদা খানমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে মাথাপিছু জাতীয় আয়ের পরিমাণ এক হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশী মুদ্রায় এক লাখ ২৭ হাজার ৪০১ টাকা। দেশের আয় বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ প্রতিবন্ধকতা অর্থাৎ বিদ্যুৎ, গ্যাস প্রাপ্তিতে বিলম্ব, বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকরণে প্রতিষ্ঠানিক জটিলতা, নিষ্কটক জমির অভাব, ঋণের উচ্চ সুদের হার ইত্যাদি অপসারণে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভুমি ব্যবস্থাপনা, রেকর্ড ও রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি আধুনিকায়ণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জাসদের বেগম শিরীন আখতারের প্রশ্নের জবাবে আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানে ৩০৭টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। যার মধ্যে কারিগরি প্রকল্প ১১১টি এবং বিনিয়োগ প্রকল্প ১৯৬টি।
বেগম লায়লা আরজুমান বানুর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ব্যাংর্কাস সিলেশন কমিটির মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১০ম ও তদূবর্ধ গ্রেডের বিভিন্ন পদে মোট ৪ হাজার ৮৩৭ জন জনবল নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এসব পদপূরণে সাধারণ নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
মহিলা এমপি বেগম উম্মে রাজিয়া কাজলের লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, একজন নাগরিকের বাৎসরিক আয় আড়াই লাখ টাকা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আয়কর প্রদান করতে হয়। এ বিবেচনায় কোন কোটিপতির করের বাইরে থাকার সুযোগ নেই।
নিজাম উদ্দিন হাজারীর (ফেনী-২) প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানে (জানুয়রি ২০১৮) ব্যক্তি করদাতার সংখ্যা ৩২ লাখ ১৬ হাজার ১০১ জন। সংসদে দেয়া মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী ঢাকা জেলায় ব্যক্তি আয়কর দাতার সংখ্যা সব থেকে বেশি, ১২ লাখ ৬৩ হাজার ৬১১ জন। আয়কর দাতার সংখ্যায় সব চেয়ে পিছিয়ে মেহেরপুরে- ৬ হাজার ৬৯৪জন।পিডিএসও/মুস্তাফিজ