নিজস্ব প্রতিবেদক
গবেষণা প্রতিবেদন
ঢাকাবাসীর আয়ের ৪৪ ভাগ যায় বাসাভাড়ায়
ঢাকা শহরের বসবাসরত মানুষের আয়ের ৪৪ ভাগ অর্থ খরচ হচ্ছে বাসাভাড়ায়। আদর্শ শহরে আয়ের সর্বোচ্চ ৩০ ভাগ অর্থ সাধারণত বাসাভাড়ায় খরচ হয়। বাসাভাড়ার উচ্চমূল্যের কারণে বেশির ভাগ মানুষই নিজেদের অন্যান্য চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে। এ ছাড়া ৭১ ভাগ বাসায় কোনো উন্মুক্ত স্থান নেই। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই ৯৫ ভাগ বাসায়। নগরবিষয়ক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে।
রাজধানীর পুরান ঢাকা, মিরপুর, রামপুরা ও বাড্ডার ৪০১টি বাড়িতে জরিপ চালিয়ে এমন চিত্র মিলেছে। গবেষণা কাজ পরিচালনা করেছে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইডিজি)। গতকাল রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘নগর পরিস্থিতি ২০১৭ : ঢাকা মহানগরীর আবাসন’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরের বসবাসরত ৬৮ ভাগ মানুষ ভাড়া বাসায় থাকে। আর ৩২ ভাগ মানুষ নিজস্ব বাসায় থাকে। এর মধ্যে ৫৫ ভাগ মানুষের চাহিদা সর্বোচ্চ এক হাজার বর্গফুটের বাসার। আর পাঁচ ভাগ মানুষের চাহিদা দুই হাজার বর্গফুট বা তার চেয়ে বেশি স্পেসের বাসার। সংগতি না থাকায় ঢাকা শহরে বসবাসরত ৬৮ ভাগ লোক রাজধানীতে নিজস্ব আবাসন কেনার কথা চিন্তা করে না। এসব মানুষকে নিজস্ব আবাসন নিশ্চিত করতে নীতি সুবিধা সৃষ্টির সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদন।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরো উঠে এসেছে, নগরীর শতকরা এক শতাংশ বাসাবাড়িতে অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম রয়েছে। আর ৭৭ শতাংশ মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে কিছুটা অবগত আছে, কিন্তু গবেষণার ৭১ শতাংশ মানুষই বলছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের অর্থাৎ ভূমিকম্পের সময় খালি জায়গার অভাব রয়েছে।
এ ছাড়া গবেষণা প্রতিবেদনে ঢাকা শহরের ওপর চাপ কমানোর জোর সুপারিশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকার কাছাকাছি উপশহর গড়ে তুলে উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ট্রেন, মেট্রোরেল, সড়কসহ আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যারা ঢাকা শহরে থাকতে বাধ্য হচ্ছে, তাদের জন্য উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করার সুপারিশ করা হয়েছে। আর যেসব নীতি সহায়তা থাকার পরও যেসবের বাস্তবায়ন নেই, সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন করারও জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।
এ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনের বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করেন বিআইডিজির নির্বাহী পরিচালক ড. সুলতান হাফিজ রহমান। এ ছাড়াও সংস্থাটির গবেষক দলনেতা সৈয়দ সেলিনা আজিজ, সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট সিরাজুল ইসলাম, রিসার্চ ফেলো ড. শাহনেওয়াজ হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পিডিএসও/তাজ