reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৪ জুন, ২০১৮

মাঠ মাতাতে পারেন যেসব তুর্কি

বিশ্বকাপে খেলাটা যেকোনো ফুটবলারের স্বপ্ন। এই মঞ্চ দিয়েই বিদায় নিয়েছেন অনেক রথি-মহারথি। এসব কিংবদন্তির বিদায়লগ্নে প্রতি বছরই উত্থান হচ্ছে নতুনদের। বিশ্বকাপে আলো ছড়ানোর সুবাদে অনেক তরুণ খেলোয়াড়কে চিনেছে। রাশিয়া বিশ্বকাপও অপেক্ষায় আছে এমনকিছু তারকার। দেখে নেয়া যাক এবার বিশ্বকাপ মাতাবেন এমন সম্ভাব্য ১০ জন তরুণ তুর্কিকে।

গ্যাব্রিয়েল জেসুস, ব্রাজিল

রোনালদো নাজারিওর বিদায়ের পর একজন নাম্বার নাইন; খুঁজে ফিরছিল জেসুস। একের পর এক স্ট্রাইকার এসেছেন, গিয়েছেন। কেউই রোনালদোর জুতোয় পা গলাতে পারেননি। তবে এবার সেই অভাব পূরণ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েই এসেছেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ম্যানচেস্টার সিটির মাত্র ২১ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারকে এবারের বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট জেতার অন্যতম দাবিদার ভাবা হচ্ছে। ফিনিশিং, পজিশনিং সেন্স, সতীর্থদের সঙ্গে বোঝাপড়া মিলিয়ে জেসুস পরিপূর্ণ একটি প্যাকেজ। গোলের জন্য তার পায়ের দিকেই তাকিয়ে থাকবে ব্রাজিল।

মার্কো এসেনসিও, স্পেন

রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলছেন এই কথাটিই যথেষ্ঠ একজন খেলোয়াড়ের মান বোঝাতে। কিন্তু এসেনসিও কিন্তু নিজেকে প্রমাণ করেছেন পারফরম্যান্স দিয়েই। স্প্যানিশ এই ফুটবলার ছোট্ট ক্যারিয়ারে মনে রাখার মতো অনেক গোলই করে ফেলেছেন এরই মধ্যে। ডান-বাম দুই পায়েই সমানে শট করতে পারা তার সবচেয়ে বড় গুণ। স্কিল, ড্রিবলিং, পাসিং, ফ্রি-কিক, খেলা গড়াতেও কম যান না। স্পেনের বিশ্বকাপ সাফল্যের অনেকাংশই নির্ভর করছে এসেনসিওর জ্বলে উঠার ওপর।

রদ্রিগো বেনটাকুর, উরুগুয়ে

ইতালিয়ান সিরি’এ লিগের জুভেন্টাসের হয়ে মাত্র পাঁচটি ম্যাচে প্রথম একাদশে সুযোগ পেলেও উরুগুয়ে দলে জায়গা নিশ্চিত বেনটাকুরের। একজন এটাকিং মিডফিল্ডারের যেসব মারণাস্ত্র থাকা উচিত তার সবই আছে বেনটাকুরের। পাসিং, সুযোগসন্ধানী মনোভাব, ভিশন, খেলা গড়ে দেয়ার ক্ষমতা উরুগুয়ে দলে বেনটাকুরকে করেছে অপরিহার্য। লুইস সুয়ারেজ, এডিনসন কাভানিদের নিয়ে গড়া উরুগুয়ে ফরোয়ার্ড লাইনআপের পেছনে বেনটাকুরের খেলা নিয়ন্ত্রণ করা এবং ফাইনাল পাস দেয়ার ক্ষমতা কাজে লাগাতে পারলে উরুগুয়ে বিশ্বকাপে অনেক দূর যাওয়ার আশা করতেই পারে।

আলবার্ট গুডমুন্ডসন, আইসল্যান্ড

এই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলবে আইসল্যান্ড। এই উপলক্ষকে রাঙিয়ে তুলতে চায় তারা। আইসল্যান্ড তা করতে পারবে কিনা সেটি নির্ভর করছে গুডমুন্ডসনের ফর্মের ওপর। পিএসভি আইন্দোফেইনের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স ছিল তার বিদায়ী মৌসুমজুড়েই। ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোর নজরেও পড়েছেন। গতি, ফিনিশিং করার ক্ষমতা, ডিফেন্সে এলোমেলো করে দেয়ার মতো স্কিল নিয়ে গুডমুন্ডসন দারুণ একজন উইংগার। আর্জেন্টিনার সঙ্গে গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচের একদিন পরই ২১ পূর্ণ করতে যাওয়া গুডমুন্ডসন নিশ্চয়ই দিনটা স্মরণীয় করে রাখতে চাইবেন।

ইউরি তিয়েলেমানস, বেলজিয়াম

বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের আরেক কান্ডারি তিয়েলেমানস। ২০১৬-১৭ মৌসুমে মাত্র কুড়ি বছর বয়সেই বেলজিয়ান লিগের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পর পাড়ি জমিয়েছেন মোনাকোতে। সেখানেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন মৌসুমজুড়ে। বক্স টু বক্স মিডফিল্ডারের উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই তিয়েলেমানস। বেলজিয়ামের খেলার ধরনের সঙ্গে বেশ মানিয়ে নিয়েছেন তিনি। রবার্তো মার্টিনেজও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিয়েলেমানস তার কৌশলের অন্যতম অস্ত্র হতে যাচ্ছেন। দারুণ পাসিং, মাঠ নিয়ন্ত্রণ করতে পারার সামর্থ্য বলে দেয় তিয়েলেমানস বিশ্ব ফুটবলের ভবিষ্যৎ সেরাদের একজন হতে যাচ্ছেন।

আশরাফ হাকিমি, মরক্কো

মাত্র ১৯ বছর বয়সেই রিয়াল মাদ্রিদের মূল একাদশে সুযোগ পেয়েছেন আশরাফ হাকিমি। মৌসুমের অনেকটা সময় ড্যানি কারভাহালের জায়গায় মাদ্রিদের ডান দিকের ডিফেন্সটাও সামলেছেন দারুণ দক্ষতায়। তার দেশ মরক্কো বিশ্বকাপে ফিরেছে দুই দশক পর। ফেরাটা স্মরণীয় করে রাখতে চাইবে পুরো মরক্কো দলই। সেই দলের অনত্যম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হাকিমি। ডান দিকের রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি আক্রমণেও পারদর্শী তিনি। তার গতি, ক্রস সমস্যায় ফেলতে পারে প্রতিপক্ষ ডিফেন্সকে। পর্তুগাল, স্পেনের গ্রুপ থেকে সামনে এগোতে চাইলে হাকিমির ওপর নির্ভর করতেই হবে মরক্কোকে।

মার্কাস রাশফোর্ড, ইংল্যান্ড

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সতীর্থ ও সমর্থকরা আদর করে তাকে ‘দ্য কিড’ বলে ডাকেন। তিনি ‘বাচ্চা’ হতে পারেন তবে রাশফোর্ড ইতিমধ্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন বড় হতেই এসেছেন তিনি। স্যার ববি চার্লটন, রুদ ফন নিস্টলরয়, ওয়েইন রুনি, রবিন ফন পার্সিদের মতো কিংবদন্তিদের জুতোয় পা গলাতে এসেছেন রাশফোর্ড। গেল মৌসুমটা উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গেলেও বিশ্বকাপে জ্বলে উঠার সামর্থ্য পুরোপুরিই আছে রাশফোর্ডের। হ্যারি কেনের সঙ্গে জুটিটা জমে গেলে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ যাত্রা আরো মসৃণ হবে তা বলাই যায়।

কিলিয়ান এমবাপ্পে, ফ্রান্স

পেশাদারি ক্যারিয়ার শুরু করেছেন মাত্র ৩ বছর। এরই মধ্যে বিশ্ব ফুটবলে নিজের আগমনী বার্তা জানিয়ে রেখেছেন ফরাসি সেনসেশন। এই মুহূর্তে পিএসজির হয়ে মাঠ মাতানো এমবাপ্পের স্কিল আর ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার ক্ষমতাই বলে দেয় রাজত্ব করতেই এসেছেন তিনি। অনেকেরই ধারণা মেসি-রোনালদোর পর নেইমার নন, এমবাপ্পেই হবেন ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা। বিশ্বকাপে সাফল্য পেতে ফ্রান্সও তাকিয়ে তার দিকে।

ওসমান ডেম্বেলে, ফ্রান্স

ফ্রান্সের কী ভাগ্য দেখুন! কেবল এমবাপ্পেই নয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ হতে যাওয়া আরেকটি হীরেও তাদেরই। মৌসুমের শুরুতে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে বার্সেলোনা তাকে কিনেছে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা দিয়ে! এটাই প্রমাণ করে ডেম্বেলের সম্ভাবনা কতটুকু। ডেম্বেলের গতি, স্কিল যেকোনো ডিফেন্সের শিরদাঁড়ায় ভয় ধরিয়ে দিতে বাধ্য। বাঁ-পাশে এমবাপ্পে, ডান পাশে ডেম্বেলে। ফ্রান্সের এই আক্রমণভাগ বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষে কীভাবে সামলাবে, সেটি নিয়ে আগ্রহ এখন সবারই।

গঞ্জালো গুয়েদেস, পর্তুগাল

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো যে দলে খেলেন সেই দলে অন্য কেউ নিজের দিকে আলো টেনে নেবে সেটা অসম্ভব ব্যাপারই। তবে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করার ক্ষমতা পর্তুগাল দলে যে কজনের আছে তাদের মধ্যে একজন গঞ্জালো গুয়েদেস। ভ্যালেন্সিয়াকে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করানোর পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল গুয়েদেসের। উইং ধরে চিতার মতো ক্ষিপ্রগতির দৌড় প্রতিপক্ষের ডিফেন্সের জন্য ভয়ের কারণ। দুর্দান্ত ক্রস করার ক্ষমতা, ড্রিবলিং, গতি মিলিয়ে গুয়েদেস খুবই বিপজ্জনক একজন খেলোয়াড়। বিশ্বকাপে কেবলমাত্র রোনালদো নন, পর্তুগাল গুয়েদেসের দিকেও তাকিয়ে থাকবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist