reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০১ জুলাই, ২০১৬

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পরিবর্তন দরকার

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই ১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, অক্টোবরে আমাদের ক্লাস শুরু হলো। তখন দেশে একটা উন্মাতাল পরিস্থিতি। স্বায়ত্তশাসনের সংগ্রামে নেমেছি তখন আমরা সবাই। আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে খুব উত্তপ্ত ছিল তখনকার পরিবেশ। কিন্তু সে সময়ও দেখেছি ক্লাসের সময় ক্লাস হয়েছে। ক্লাস শেষ করেই আমরা বটলতলার দিকে চলে যেতাম।

তখন ডাকসু সচল ছিল। তখনকার ছাত্রনেতারা খুব বিখ্যাত হয়েছিলেন পরে। তাদের সামনাসামনি দেখেছি। তখনো পড়াশোনাটা মূল্যবান বলে বিবেচিত হতো, সবাই পড়াশোনা করতেন। রাজনীতির কারণ দেখিয়ে কখনো ক্লাস বাদ দিয়েছেন কোনো শিক্ষক তা দেখিনি। ছাত্রছাত্রীরাও ক্লাস করেছে। আবার যখন ডাক পড়েছে আমরা মিছিলে গিয়েছি, জলকামানের পানি খেয়েছিÑসব একই সঙ্গে চলেছে।

১৯৬৯ সালে এনএসএফের এক ছেলে পাসপাত্তু নিহত হওয়ার পর তিন মাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ফিরে এসেই একেবারে সত্তরের ঘূর্ণিতে পড়লাম আমরা। সত্তরের মার্চ অসাধারণ একটা সময় ছিল সবার জন্য। আমরা তখন পরিষ্কার বুঝে ফেলেছি যে পাকিস্তানের শাসকরা কী করতে চায়। কারণ আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকি তখন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। ঊনসত্তরের আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনা হলো। তখন থেকে আমরা বুঝে ফেলেছি যে বাংলাদেশ স্বাধীন হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে কোনো অস্পষ্টতা ছিল না। কিন্তু কীভাবে হবে সেটা তখন আমরা বুঝতে পারিনি আর পাকিস্তানিরা আসলে কী চাচ্ছে সেটাও আমাদের পক্ষে বোঝা মুশকিল ছিল। তারা বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকার করবে কি না, নাকি উনার প্রধানমন্ত্রী হওয়াটা ভালো, পাকিস্তানের সঙ্গে কি আমাদের কোনো সম্পর্ক থাকা উচিত, এসব অনেক প্রশ্ন বাতাসে ভাসত। আর গণমাধ্যম তো তখন খুব চুপচাপ ছিল। গণমাধ্যম বলতে কয়েকটা দৈনিক কাগজ ছিল, রেডিও ছিল সরকারি। দু-একটা কাগজে হয়তো লেখালেখি হচ্ছে, কিন্তু বেশির ভাগই এই চায়ের টেবিলে আড্ডা। আর তখন বিশ্ববিদ্যালয় খুব আড্ডাকেন্দ্রিক ছিল। সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদদের আড্ডা ছিল। শরিফ মিয়ার ক্যান্টিনে হতো সাহিত্যিকদের আড্ডা আর মধুর ক্যান্টিনে বড় রাজনৈতিক নেতারা আড্ডা দিতেন।

এভাবে আমার পড়ালেখা এবং সংগ্রাম একসঙ্গে চলেছে। একাত্তর সাল বিরাট নাড়া দিয়ে গেল আমাদের। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের বহু মেধাবী ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী শহিদ হলেন এবং ফিরে আসার পর সময়টা যে কি দুর্বিষহ ছিল। চারদিকে সবকিছু ভেঙে পড়ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো অর্থ নেই, বেতন পাওয়া যাবে কি না সেটা অনিশ্চিত। তার পরও সবাই কিন্তু কাজে নেমে পড়েছিলেন। একটা উদাহরণ দেই। ওই সময় একটা অথবা দুটা জামার বেশি কেউ কিনতেন না। সংগতি থাকলেও কিনতেন না, কারণ যার সংগতি নেই তিনি দেখলে যেন কষ্ট না পান। অনেক পরিবারে মাত্র কয়েক মাস আগে হয়তো বাবা মারা গেছেন, চাচা না হয় কেউ, এমন কোনো পরিবার ছিল না যেখানে বিচ্ছেদ ঘটেনি বা আহত হননি বা কোনো একটা গ্রামে কোনো এক নারী নির্যাতিত হয়েছেন সেই গ্রামে কোনো শোকের ছায়া নেমেছে। ফলে সব মিলিয়ে পরিবেশটাই অন্যরকম ছিল। একটা বিমর্ষ অবস্থা চারদিকে আবার একই সঙ্গে উদ্যোগও নিতে হচ্ছে সবাইকে। পাশাপাশি আমরা যারা বামপন্থার দিকে ঢুকে পড়েছিলাম বহু আগে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। তখন মার্কসবাদী চিন্তার একটা শক্তি ছিল। বাম চিন্তার একটা বিশাল জায়গা ছিল। সেই অবস্থান থেকে আমাদের যে আকাক্সক্ষা ছিল বাংলাদেশ একটা সাম্যের জায়গা হবে, তা হলো না। বাংলাদেশ পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থার মধ্য দিয়েই আগাল। এ ছাড়া কোনো বিকল্পও ছিল না। কারণ বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো সম্পদ না থাকায় ঘুরে দাঁড়ানোটা খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে রাজনীতিটা খুব ঘোলাটে হয়ে গেল এবং বামপন্থার সঙ্গে সরকারিপন্থার একটা বিভাগ বহুদিন ধরে চলতে লাগল। এমন পরিস্থিতিতে আমি পাস করে বের হলাম। পাস করে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলাম। যে কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার বড় ধরনের কোনো বিচ্ছেদ নেই।

আমরা যখন ছাত্র ছিলাম হলগুলোতে ‘বড়ভাই তন্ত্র’ ছিল না। সবার জন্য সিট বরাদ্দ ছিল। তা একটা স্বস্তির ব্যাপার ছিল। হলে উঠেই আমি সিঙ্গেল রুম পেয়ে গেলাম। আমি আর কুমিল্লার এক বন্ধু ঘুরে ঘুরে, রুম দেখে দেখে একটা পছন্দ করে সেখানে উঠলাম। এখন আর সেটা ভাবা যায় না। স্বাধীনতার পর যখন ধীরে ধীরে ছাত্রদের চাপ বাড়ল তখনই দেখলাম, ছাত্রনেতাদের রূপে বদল ঘটেছে। অথচ তার আগে তোফায়েল আহমেদ, আবদুল কুদ্দুস মাখন তখন হেঁটে অথবা রিকশায় জহুরুল হক হল (তখন ছিল ইকবাল হল) থেকে আসতেন মধুর ক্যান্টিনে। তারা রিকশা থেকে নেমে একজন আরেকজনকে বলতেন, ‘পয়সাটা তুই দে’। তো অনেক কষ্ট করে হয়তো পকেট থেকে বের করে চারআনা পয়সা দিচ্ছেন। দিতে দিতে হয়তো বলতেন, ‘যাওয়ার সময় তুই দিবি’। এ ধরনের আলাপ হতো। আদর্শ এবং সম্পর্কের জায়গা কোথায় ছিল তা এসব ঘটনায় আঁচ করা যায়। এ ছাড়া বটতলায় তখন আলোচনা করতেন মতিয়া চৌধুরী, তার নাম ছিল অগ্নিকন্যা। মেনন (রাশেদ খান মেনন) ভাইও খুব বড় ছাত্রনেতা ছিলেন তখন, পাকিস্তানের তারিক আলি আসতেনÑতাদের বক্তৃতা সামনাসামনি শুনেছি। এনএসএফের নেতা নাজিম কামরান চৌধুরীর বক্তৃতাও শুনেছি। তিনি সিলেটের ভাষা আর ইংরেজি জানতেন শুধু। এই পরিবেশটা তখন কিন্তু ছিল।

স্বাধীনতার পর দেখলাম সেই ঐতিহ্য আমরা অনেকখানি হারিয়ে ফেললাম। আমাদের চোখের সামনেই সেসব ঘটতে থাকল। রাজনীতি টাকাপয়সা কামানোর এবং ক্ষমতা দেখানোর জায়গা হয়ে গেল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর তো দেশে কোনো গণতন্ত্রই ছিল না। আশির দশকে এসে প্রথমেই জেনারেল এরশাদ যে কাজটা করেছিলেন তিনি কোনো ছাত্রসংগঠন তৈরি করেননি। ফলে আশির দশকে ওই ছাত্র নেতৃত্ব আবার ফিরে এসেছিল। এর মধ্যে ছিয়াত্তর সালে আমি কানাডায় যাই পিএইচডি করার জন্য। একাশি সালে ফিরে আসার পর আর কোথাও যাইনি। তো আশির দশকে আমি দেখেছি, সেটাও একটা জাগরণের সময় ছিল। এ সময়কার ছাত্রনেতারা বুদ্ধিদীপ্ত এবং আদর্শবাদী ছাত্র রাজনীতি আবার সামনে নিয়ে এসেছিল। তখন বিএনপির যে ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ছিল, তারাও কিন্তু অতটা ক্ষমতার রাজনীতির দিকে ছিল না। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল একসঙ্গে কাজ করেছে। তাদের সঙ্গে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনও ছিল। বামপন্থিরা কিন্তু তাদের আদর্শ এখনো ধরে রেখেছে। এখনো শিক্ষা ফি বাড়লে এরা রাস্তায় নামে। বড় দুই দলের ছাত্র সংগঠনগুলো এখন আর এসব নিয়ে ভাবে না। তারা মূলধারার রাজনীতির মধ্যে চলে গেছে। একটা সময় ছাত্রলীগ যা বলছে আর আওয়ামী লীগ যা বলছে তাতে পার্থক্য দেখা যেত। ছাত্রনেতারা যা বলতেন অনেক সময় রাজনৈতিক নেতারা তা বলতেন না। কারণ, ছাত্রনেতারা যা বলতেন তা শোনার জন্য অনেক সময় মন্ত্রী বা নেতারা বসে থাকতেন। এখন উল্টো।

নব্বইয়ের পর থেকে যা আমাদের গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তন বলে বিবেচনা করা হয়, তখন থেকেই বর্তমান ছাত্র রাজনীতির একটা ভিন্ন প্রকাশ আমরা দেখতে পেয়েছি। হানাহানি, টেন্ডারবাজি, বোমাবাজি, ভর্তিবাণিজ্য পুরো বিষয়টি নব্বইয়ের পর থেকে একটা অন্য রূপ নিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খুব বড় একটা জায়গা কিন্তু। একদিকে এসব থাকলেও আদর্শবাদী রাজনীতিও কিন্তু মানুষ করছে। সেসব ছেলেমেয়ের সঙ্গে আমার দেখা হয়। আমি তাদের বলি উৎসাহ না হারাতে। তারাও বলে, এটা তাদের আদর্শের সংগ্রাম এবং সেটা তারা চালিয়ে যাবে। এটা খুব আশান্বিত করে আমাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই পরিবেশ ফিরে পেতে হলে কিছু কাজ করতে হবে। একটা হলো যেহেতু ছাত্র রাজনীতি জাতীয় রাজনীতির মধ্যে চলে গেছে এবং ছাত্র সংগঠনগুলো অঙ্গসংগঠনে পরিণত হয়েছে। ফলে বড় দলগুলোকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে। অর্থাৎ ছাত্রলীগকে নিজস্ব অস্তিত্ব নিয়ে থাকতে হবে, আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। ছাত্রদলকেও বিএনপিতে বিলীন হয়ে গেলে চলবে না, তাদের আলাদা অস্তিত্ব বজায় রাখতে হবে। তারা অনেক সময় মূল দলের সমালোচনাও করবে। ধরা যাক, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তখন ছাত্রস্বার্থে ছাত্রদলবিরোধী অবস্থানও নিতে পারে। এমন একটা আদর্শিক ছাত্ররাজনীতি আমরা দেখেছি ষাটের দশকে। এখন যারা বড় বড় নেতা তারা কিন্তু সেই সময়টা পার করে এসেছেন। কাজেই তারা পারবেন। তারা যদি একটা উদ্যোগ নেন আমরা এটাকে মুক্ত করব সেটা সম্ভব হবে।

এ ছাড়া ছাত্ররাজনীতিতে কিছু বিষয় নির্ধারণ করতে হবে। যেমন ষাটের দশকে যারা বিভিন্ন হলের ভিপি নির্বাচিত হতেন তাদের ফার্স্ট ক্লাস থাকতে হতো। তখন যিনি ফার্স্ট ক্লাস পেতেন তার পেছনে সবাই ছুটে যেত। আমাদের এখনকার অর্থমন্ত্রী যখন ফার্স্ট ক্লাস পেলেন তাকে পেতেও অনেক সংগঠন চেষ্টা করেছে। গিয়ে বলেছেন, আমাদের নেতা হবে। জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী স্যারও ফার্স্ট ক্লাস পাওয়ার পর এমনটা ঘটেছিল। তখন এটা একটা চল ছিল। মেধাবী ছাত্রদের রাজনীতিতে নিয়ে আসতে হবে। ছাত্র নেতৃত্বের একটা বয়সও নির্ধারণ করে দিতে হবে। মাস্টার্সের পর আর কেউ ছাত্রনেতা থাকতে পারবে না। ডাকসু নির্বাচন নিয়মিত করতে হবে। বড়দলগুলো আদর্শিক রাজনীতি পরিচালনার অভিজ্ঞতা পেতে পারে ছাত্রফ্রন্ট অথবা ছাত্র ইউনিয়নের কাছ থেকে। তারা আদর্শভিত্তিক। ছাত্র সংগঠন দিয়ে কোনো দল এখন আর ক্ষমতায় থাকে না। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়েরও কিন্তু কিছু বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়মিত করা, কোনো কিছু হলে আজীবন নিষিদ্ধ করা ইত্যাদি। ক্যাম্পাস পুলিশের প্রয়োজন রয়েছে। ক্যাম্পাস পুলিশ মানে তারা লাঠি নিয়ে দৌড়াবে না। যদি কোথাও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় তাহলে তারা সমঝোতার চেষ্টা করবে। তারা অনেকটা অভিভাবকের ভূমিকায় থাকবেন। বাইরের পুলিশ এলে পরিস্থিতি অনেক সময় ঘোলাটে হয়ে যায়। প্রক্টরিয়াল বডি নিজেই যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তদারকি করে তাহলেই অনেক দূর আমরা এগিয়ে যাব। এ ছাড়া উপাচার্য নির্বাচন নির্দলীয় হতে হবে এবং সরকারকে নিজের দলের ব্যক্তিকে উপাচার্য নির্বাচন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আকর্ষণীয় এবং বড় মাপের কোনো প-িতকে উপাচার্য করা হোক। অনেকগুলো পরিবর্তন একসঙ্গে করতে হবে।

শিক্ষকদের রাজনীতিও খুব বিরক্তিকর একটা জিনিস এখানে। শিক্ষকরা যে রাজনীতি করতেন তা মানুষের জন্য, বড় বড় আদর্শের প্রশ্নে তারা রাজনীতি করতেন। এখন রাজনীতি হয়ে গেছে ছোট ছোট বিষয় নিয়ে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়তের পক্ষে তারা সংগঠন গড়ে তুলছেন। দলীয় ভিত্তিতে যখন নির্বাচন হয় এটি আমার কাছে খুব দৃষ্টিকটু লাগে। এটি আমাদের শিক্ষক রাজনীতির চেতনাকে নষ্ট করে দিয়েছে। আমি মনে করি, শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি থেকে দূরে চলে আসা উচিত। তাদের একটা প্রতিবাদী অবস্থান ধরে রাখা উচিত। ছাত্রছাত্রীদের ইস্যু নিয়ে তাদের রাজনীতি করা উচিত। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পরিমাণ বৃত্তি কেন দেওয়া হচ্ছে না, বিজ্ঞান ভবনের কেন এত জীর্ণদশা, গবেষণার জন্য আরো কেন বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না, এগুলো হওয়া উচিত শিক্ষক রাজনীতির বিষয়বস্তু। পাশাপাশি যে আদর্শ আমরা ধারণ করেছিলাম দীর্ঘদিন, যেমন শ্রমিক কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা এটা আমাদের শিক্ষকদের কাজ। আমাদের প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের যখন আন্দোলন হয় তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সেই আন্দোলনে শরিক হবেন। অর্থাৎ গণমানুষের যে রাজনীতি তাতে শিক্ষকরা আগের মতো এখনো সক্রিয় থাকতে পারেন। নির্বাচনগুলো সীমিত করতে হবে। ডিন নির্বাচনের কোনো কারণ আমি দেখি না। ডিন হবেন কোনো অনুষদের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। যিনি একাডেমিক নেতৃত্ব দেবেন। ভর্তির জন্য আলাদা একটা শাখা খোলা যায়। যিনি ভর্তির বিষয়টি তদারকি করবেন তিনি শিক্ষক না হলেও চলবে। তিনি ব্যবস্থাপনায় দক্ষ হলেই চলবে। সব ভর্তি তার হাতেই থাকবে। তাতে অনুষদের ডিনরা এসব থেকে মুক্ত হয়ে একাডেমিক ব্যাপারে মনোযোগ দিতে পারবেন। পড়াশোনার পরিবেশ আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। গ্রন্থাগারকে সমৃদ্ধ করতে হবে। এগুলো না করলে আমাদের শিক্ষক রাজনীতি ক্রমাগত আমাদের পিছিয়ে নিয়ে যাবে।

লেখক : অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist