জালাল হোসেন মামুন, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
আখাউড়া স্থলবন্দর
আবেদন লিখে ভ্রমণ কর জমা দেওয়া যাবে না
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাতায়াতকারী যাত্রীরা এখন থেকে আর আবেদনের মাধ্যমে নগদ ভ্রমণ কর (ট্রাভেল ট্যাক্স) জমা দিতে পারবে না। প্রথমে নিয়মিত এবং পরে সাপ্তাহিক ছুটি ও সরকারি ছুটির দিনে শুল্ক বিভাগে (কাস্টমস) আবেদনের মাধ্যমে ভ্রমণ কর জমা নেওয়া হলেও গত শুক্রবার থেকে সে ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতে যাওয়ার পথে সব দেশের নাগরিকদের ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর দিতে হয়। সোনালী ব্যাংকের নির্ধারিত রসিদের মাধ্যমে এ ভ্রমণকর জমা দিয়ে এর একটি কপি কাস্টমসকে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে ব্যাংকে জমা দেওয়ার আবেদনের মাধ্যমে নগদ টাকা রেখে যাওয়ার সুযোগ চালু করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের কাছ থেকে রাখা নগদ টাকা পরবর্তীতে ব্যাংকে জমা দিয়ে রসিদ কাটে কাস্টমস। স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শ্যামল কুমার কুন্ডু বলেন, অনেক আগে থেকেই নগদ টাকা রেখে পরে ব্যাংকের রসিদ কাটার নিয়ম রয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থেই এটা করা হতো। এ নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে তা বন্ধ রাখা হয়। তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সকলের সমন্বয় সিদ্ধান্তে সর্বশেষ ছুটির দিনে আবেদনের মাধ্যমে টাকা জমা নেওয়া হয়। তবে পরবর্তীতে যেন এভাবে টাকা রাখা না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে। গত শুক্রবার শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আখাউড়া স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, ভ্রমণকর নিয়ে জটিলতায় দুপুর ১২টা নাগাদ যাত্রীরা আটকে ছিলেন। পরে যাত্রীদের দাবির মুখে একাধিক সংস্থার সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে ‘বিশেষ ব্যবস্থায়’ ভ্রমণ কর আদায় করা হয়, যা পরে সোনালী ব্যাংকের নির্ধারিত রসিদে কাটা হয়। একাধিক সূত্র জানায়, যাত্রীদের কাছ থেকে রাখা নগদ টাকায় সঠিকভাবে ব্যাংকের রসিদ কাটা হয় না বলে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া অনেক যাত্রীর কাছ থেকে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত হারে টাকা নেওয়ার অভিযোগও ওঠে কাস্টমসের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে কাস্টমস ও বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
এ অবস্থায় গত ২০ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকের নির্ধারিত রসিদ ছাড়া যাত্রীদেরকে যেতে বাধা দেয় বিজিবি। কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই ‘বিশেষ ব্যবস্থায়’ টাকা নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলে জেলা প্রশাসন, কাস্টমস ও বিজিবির মধ্যস্থতায় এর আপাত সুরাহা হয়। যাত্রীরা অভিযোগ করেন, নগদ নেওয়ার ব্যবস্থা উঠে যাওয়ার বিষয়টি এখনো সেভাবে জানাজানি হয়নি কিংবা প্রচারণা চালানো হয়নি।
এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজনে বিশেষ করে ছুটির দিনে ভারত যেতে কীভাবে ভ্রমণ কর কাটতে হবে, সে বিষয়েও কোনো নির্দেশনা নেই। কাস্টমসের উপ-পরিদর্শক মো. আবুল কাসেম জানান, যাত্রীদের সুবিধার্থে অনেক আগে থেকেই আবেদনের মাধ্যমে টাকা জমা নেওয়ার ব্যবস্থা চালু আছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তা বন্ধ রাখা হয়।
গত শুক্রবারও ওই ব্যবস্থা বন্ধ রাখার কথা ছিল। কিন্তু অনেক যাত্রী ভ্রমণ কর না নিয়ে এলে সমস্যা দেখা দেয়। এ অবস্থায় যাত্রীরাই সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দুপুর ১২টা থেকে পৌনে ১টা নাগাদ ৬১ জনের কাছ থেকে নগদ টাকা আদায় করা হয়।
"