নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ নভেম্বর, ২০১৭

সহজে ব্যবসা করার সূচকে দ্রুত উন্নতির পরামর্শ

বিশ্বব্যাংকের সহজে ব্যবসা করার সূচক বা ‘ডুয়িং বিজনেস ইনডেক্স ২০১৮’-এ বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের ওপরে। এই তথ্য একজন বিদেশি বিনিয়োগকারীকে বাংলাদেশের ব্যবসার পরিবেশ সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য দেয়। এ অবস্থান থেকে দ্রুত উন্নতি করতে না পারলে দেশের বিনিয়োগ আরো কমে যাবে বলে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মত।

তবে ইনডেক্স অনুযায়ী গত কয়েক বছরের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থানের খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। তবুও দেশের অবস্থান একেবারে নিচের দিকে। সম্প্রতি প্রকাশিত ইনডেক্সে বাংলাদেশ আগের বছরের তুলনায় এক ধাপ পিছিয়ে ১৯০টি দেশের মধ্যে ১৭৭তম অবস্থানে রয়েছে। অবকাঠামো, ব্যবসা নিবন্ধন খরচসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিনিয়োগ বা ব্যবসার পরিবেশে চরম দুর্বলতা রয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১০টি সূচকের মধ্যে পাঁচটিতে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি হয়েছে। নেতিবাচক সংস্কারের কারণেই এই পরিণতি হয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এর মধ্যে ‘ব্যবসা শুরু করার সূচকে’ নেতিবাচক সংস্কার হয়েছে। এই সূচকে নয় ধাপ অবনতি হয়েছে দেশের। কারণ, ব্যবসা নিবন্ধনের খরচ এ বছর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার ছোট ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে অন্য দেশগুলো বেশি ভালো করায় ছয় ধাপ অবনতি হয়েছে।

ডুয়িং বিজনেস র‌্যাঙ্কিংয়ের বৈশিষ্ট্য হলো অন্য অর্থনীতি বা দেশের তুলনায় কে কতটা ভালো করছে। এই প্রতিযোগিতায় ২০১৬ সালের জুলাই থেকে গত মে পর্যন্ত বাংলাদেশে ব্যবসায় পরিবেশের বড় কোনো সংস্কার হয়নি, যা ডুয়িং বিজনেস পদ্ধতি দ্বারা স্বীকৃত। কারণ, দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ছাড়া এই সূচকে উন্নতি করা কঠিন। তবে বাংলাদেশ সূচকে উন্নতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গত বছরের নভেম্বরে। ফলে যেসব সংস্কার হচ্ছে তা এখনো দৃশ্যমান হয়নি। সবই প্রস্তুতিমূলক অবস্থায় রয়েছে।

বিডার নেতৃত্বে ২৫-২৬টি মন্ত্রণালয় ও সরকারি বিভাগ গত এপ্রিল থেকে এই লক্ষ্যমাত্রা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে। এমনকি ডুয়িং বিজনেস সংস্কারবিষয়ক একটি আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদিও সংস্কার বাস্তবায়নের কাজ যথাসময়ে শুরু করা যায়নি বলে অভিযোগ বিশ্লেষকদের। তাদের মতে, এ জন্যই ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থানের খুব একটা উন্নতি হয়নি।

২০২১ সালের মধ্যে সরকার সহজে ব্যবসা করার সূচকে বাংলাদেশকে শীর্ষ ১০০ দেশের মধ্যে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে। কিন্তু উল্টো একধাপ পিছিয়ে গেছে বাংলাদেশ। এদিকে টেকসই উন্নয়নসহ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন। ফলে খুব দ্রুতগতিতে এই সূচকে উন্নতি করার পরামর্শ সবার। সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে আগামী বছর বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতির যথেষ্ট সুযোগ আছে বলেও তারা মনে করেন। এতে বাড়বে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ, বদলে যাবে দেশের অর্থনৈতিক চিত্র।

আগামী বছর বাংলাদেশের অবস্থান নির্ধারিত হবে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বাস্তবায়িত সংস্কারের ভিত্তিতে। ফলে সময় বেশি নেই। সংস্কার না হলে বিনিয়োগে ধস নামবে। রফতানির বহুমুখীকরণ, কর্মসংস্থান, বিনিয়োগের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে নেতিবাচক পরিস্থিতির মুখে পড়বে বাংলাদেশ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist