নিজস্ব প্রতিবেদক
এবার ছোট ঋণ নিলেও তথ্য সংরক্ষণ করা হবে
বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) এত দিন বড় গ্রাহক ও ঋণখেলাপিদের তথ্য সংরক্ষণ করত। এখন থেকে যে কেউ ব্যাংক থেকে যেকোনো পরিমাণ টাকা ঋণ নিলে সেই তথ্যও থাকবে সিআইবিতে। এতদিন তথ্যের জন্য ব্যাংকের ওপর নির্ভশীল ছিল সিআইবি।
সিআইবি তথ্যভা-ার ঢেলে সাজানোর ফলে জাল বা একই দলিলে বারবার ঋণ নেওয়া বন্ধ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেন। তবে কবে থেকে এটি কার্যকর হবে, তা এখনও নির্ধারণ হয়নি।
এতদিন ঋণ নেওয়া গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করলেও ঋণের বিপরীতে মর্টগেজ হিসেবে জমির দলিলের তথ্য রাখতো না সিআইবি। এখন তথ্য জমির দলিলের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। ফলে জাল বা একই দলিলে বারবার ঋণ নেওয়া বন্ধ হবে। ভূমি অফিসের দেওয়া তথ্য ছাড়া সিআইবি কোনও দলিলও নেবে না।
মূলত গ্রাহকদের ব্যাংক ঋণ নেওয়া, তা নিয়মিত পরিশোধ করা বা না করার তথ্য সংরক্ষিত থাকে সিআইবিতে। বর্তমানে কোনও গ্রাহকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকার কম হলে সেই তথ্য সিআইবি রাখে না। একইভাবে ক্রেডিট কার্ডের কোনও গ্রাহক ১০ হাজার টাকার কম খেলাপি হলে সেই তথ্যও থাকে না সিআইবিতে। ফলে এই ধরনের গ্রাহক এক ব্যাংকে খেলাপি হওয়ার পর অন্য ব্যাংক থেকে নতুন করে ঋণ নিতে পারেন। সিআইবির নতুন উদ্যোগে এই ছোট ঋণগ্রহীতারাও নজরদারির মধ্যে আসবেন।
সূত্র জানায়, সিআইবি এতদিন ঋণ নেওয়া গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করলেও ঋণের বিপরীতে মর্টগেজ হিসেবে জমির দলিলের তথ্য রাখতো না। এখন তথ্যভা-ার ঢেলে সাজানোর পর জমির দলিলের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। ফলে জাল বা একই দলিলে বারবার ঋণ নেওয়া বন্ধ হবে। ভূমি অফিসের দেওয়া তথ্য ছাড়া সিআইবি কোনও দলিলও নেবে না। এতদিন একই দলিল দিয়ে একাধিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী ঋণের বিপরীতে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জামানতের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হবে সিআইবিতে। প্রাথমিকভাবে স্থাবর সম্পত্তি জামানতের তথ্য রাখার কাজ চলছে। পরে অস্থাবর সম্পত্তির তথ্যও রাখা হবে। ব্যুরোর কার্যক্রম সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রাহকের নেওয়া ঋণের পরিমাণ এবং ঋণ পরিশোধের প্রকৃতি যাচাই করে সঠিক গ্রাহক নির্ধারণের জন্য কমপক্ষে ২৪ মাসের ক্রেডিট হিস্ট্রি সংবলিত সিআইবি রিপোর্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
সিআইবি বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে ঋণ শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে সঠিক গ্রাহক নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, ুস্থাবর-অস্থাবর জামানতের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হলে খেলাপি প্রবণতা কিছুটা কমাতে সহায়ক হবে। তবে সিআইবির তথ্যভা-ারে সব খেলাপির তথ্য থাকলেও তাতে ব্যাংক খাতের খুব বেশি উপকার হবে না। কারণ, টাকা ফেরত না দেওয়ায় ব্যাংক গ্রাহককে খেলাপি ঘোষণা করলে অনেকেই আদালতে যান। সেক্ষেত্রে সিআইবির হয়ত কিছু করার থাকে না। সিআইবির ডেটাবেজের তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিআইবি ডাটাবেজের আওতাবহির্ভূত ৫০ হাজার টাকার নিচে ঋণগ্রহীতার সংখ্যা ২৫ লাখ এক হাজার ৭১৪ জন। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত দেশে ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই লাখ দুই হাজার ৬২৩।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিআইবি ডাটাবেজ ও এর আওতাবহির্ভূত ঋণগ্রহীতার সংখ্যা ৪০ লাখ ১১ হাজার ৭২৭ জন।
"